Published : 11 Nov 2015, 10:54 PM
বাংলাদেশের ভূমিকম্প নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা রকম প্রচার প্রচারনা চালানো হয় কিন্তু যে বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলেন না সেটি হচছে অসহায় গর্ভবতী মহিলা যারা ঝুঁকির বিবেচনায় সর্বোচচ ঝুঁকির মধ্যে আছেন।সমাজের প্রত্যকটি বিবেকবান মানুষকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং রাষ্ট্র কে এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের বদ্ধমুল ধারণা প্রচলিত আছে ভূমিকম্প হলে আমরা সবাই মারা পড়ব, কিন্তু ভূমিকম্পে নিহতের চেয়ে আহত মানুষের সংখ্যা বেশি হয় এর মধ্যে বেশিভাগ থাকে শিশু ও মহিলা। ভূমিকম্প শুরু হওয়া মাত্রই দৌড়া দৌড়ি করার প্রয়োজন নেই বরং ধৌর্য় ধারন করুণ এবং নিজের করণীয় সমপর্কে ভাবুন। কিভাবে বুঝবেন এখন কত মাত্রার ভূমিকম্প হচছে …. নিচের তথ্য গুলো অনুসরন করুণ
১-২ মাত্রার ভূমিকম্প- যন্ত্র ছাড়া কেউ টের পায় না ।
৩- মাত্রার ভূমিকম্প- বাচ্চারা এবং অল্প কিছু লোক টের পায় ।
৪- মাত্রার ভূমিকম্প- সবাই টের পায়, দরজা ও জানালা কাপতে থাকে।
৫- মাত্রার ভূমিকম্প- সিলিং ফ্যান দোলতে থাকবে, ফ্লোর কাঁপতে থাকবে ও জানালা কাঁপার শব্দ শুনতে পাবেন।
৬- মাত্রার ভূমিকম্প- দেওয়ালে ফাটল দেখা দিবে, প্লাষ্টার খসে পড়বে।
৭- মাত্রার ভূমিকম্প- ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হবে, দেওয়ালের ফাটল বড় হবে, পিলারে ফাটল দেখাদিবে, অনেক সময় দেওয়াল ধ্বসে যেতে পারে।
৮- মাত্রার ভূমিকম্প- ভবন ধ্বসে যেতে পারে ও রাস্তায় ফাটল দেখা দিবে।
৯- মাত্রার ভূমিকম্প- রানাপ্লাজার মত করে ভবন ধ্বসে যাবে ও রাস্তার ফাটলের পরিমান বৃদ্ধি পাবে।
১০- মাত্রার ভূমিকম্প- হলে আপনার শহরের বেশিভাগ ভবন ধ্বসে যাবে।
১১-১২ মাত্রার ভূমিকম্প-দেখার ভাগ্য আপনার হবে না।
আমাদের দেশের শহর গুলোতে সাধারণত ৫-৭ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই এ নিয়ে খুব উদ্ববিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।আর খুব চিন্তিত হলে ডাইনিং টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে পারেন।
কিন্তু আপনি মারা পড়তে পারেন, কি ভাবে দেখুন
১. আতংকগ্রস্থ হয়ে ।
২. হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে।
৩. বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে।
৫. আগুন লেগে।
৪. আলমিরা, শোকেজ অথবা ভারি বস্তুর পতনে।
৫. দেওয়াল ধ্বসে।
৬. ৫০-১০০ বছরের পুরনো বাডিতে থাকলে ।
৭. রোড এক্সিডেন্টে।
এই বিষয় গুলোতে একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে গর্ভবতী মহিলার ঝুঁকি অনেক বেশি। এমনিতেই গর্ভবতী মহিলার গর্ভকালীন সময়ে একটু বেশি আতঙ্কে থাকে তার উপর ভূমিকম্পের আতঙ্কে পরিস্থিতি জটিল করে তুলে ।ভূমিকম্প হওয়ার পরে গর্ভবতী মহিলাদের প্রিমেচিউর বেবির জন্ম দানের হার বেশি হয়। নেপালে ভূমিকম্প হওয়ার প্রিমেচিউর বেবির জন্ম ১০% বৃদ্দি পেয়েছিল। ভূমিকম্প হওয়ার সাথে সাথেই উচ্চ রক্তচাপ এবং এক্লেমশিয়া দেখা দিতে পারে, সেই সাথে প্রসববেদনা উঠতে পারে। অপরদিকে ভূমিকম্পের সময় গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভের বাচ্চা নড়াচড়া বন্ধ করে দিতে পারে এত আতংকগ্রস্থ না হয়ে প্রচুর পানি ও বার বার পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। মুল বিষয়টি হচছে গর্ভবতী মহিলাদের কোন ভাবেই আতংকগ্রস্থ হওয়া যাবে না, তাকে এই বিষয় গুলো জানাতে হবে এবং তাকে মানসিক ভাবে সাহসী করে তুলতে হবে।
সাধারণত ইউএনডিপি দূর্য়োগকালীন সময় দুটি কিট সরবরাহ করে থাকে, ডিগনিটি কিট এবং রিপ্রোডাক্টিভ কিট। এই ডিগনিটি কিট এর মধ্যে আছে সেনিটারি ন্যাপকিন, সাবান, টুথব্রাশ ও রিপ্রোডাক্টিভ কিট এর মধ্যে আছে ভিজাইনাল টিয়ারস, রক্তপরিসনচালন ব্যাবস্থা এবং অন্যান্য ঔষধ। জুরুরি প্রয়োজনে যে সব জিনিস আপনার সংগ্রহে রাখতে পারেন ফ্লাশ লাইট ও লাইটের ব্যাটারি, ফাস্টএইড কিট, খাবার পানি।
গর্ভবতী মহিলাদের হাতের নাগালে রাখুন
১. পুষ্টি কর শুকনো খাবার
২. শুকনো ফল
৩. প্রসুতি ও শিশুর কাপড়
৪. প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও ঔষধ
৫. অতিরিক্ত বোতলজাত পানি
৬. পরিষ্কার তোয়ালে, ধারালো কাচি, সিরিঞ্জ, মেডিকেল গ্লাভস, সুতো, চাদর, স্যানিটারি প্যাড এবং সীট।
৭. দুটো কমবল
8. পায়ের নরম জুতো
উপরের বিষয় গুলোকে মাথায় রাখুন এবং সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করুণ। এছারা কি ভাবে এই জুরুরি অবস্থা মোকাবেলা করতে পারেন তার একটি পরিকল্পনা লিখে রাখুন এবং মাঝে মাঝে দেখুন। যেহেতু আমাদের শহর গুলোতে যানজটের পরিমান বেশি তাই নিকটস্থ হাসপাতালে ঠিকানা টি মাথায় রাখুন। বিষয় গুলো আপনার পরিচিত জনকে জানান। আপনার সামান্য সচেতনতায় বেচেঁ যেতে পারে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম।
ফেইসবুকে আমি https://www.facebook.com/ershad.pahlowan