মেয়র হিসাবে পাঁচ বছর মেয়াদকালে বন্দরনগরীর স্থায়ী জলাবদ্ধতাকে ‘অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে’ নিয়ে আসাকে নিজের অন্যতম সাফল্য বলে মনে করেন এম মনজুর আলম।
Published : 26 Mar 2015, 11:54 AM
বিএনপি সমর্থিত এই মেয়রের দাবি, আগে যেখানে অল্প বৃষ্টিতেই নগরীতে দিনের পর দিন জলাবদ্ধতা থাকত, এখন ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যে পানি সরে যাচ্ছে, যাকে তিনি কোনোভাবেই ‘জলজটের’ বেশি কিছু মনে করেন না।
তার মতে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ খনন করলে এ সমস্যাও থাকবে না।
বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) শেষ সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেয়র মনজুর পাঁচ বছর আগের জলাবদ্ধতার ভয়াবহতার সঙ্গে বর্তমানের চিত্র তুলনা করার পরামর্শ দেন।
২০১০ সালে নিজের একসময়ের রাজনৈতিক ‘গুরু’ এবিএম মহিউতিদ্দন চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে চট্টগ্রামের মেয়র হন মনজুর আলম। ওই নির্বাচনে তার মূল প্রতিশ্রুতিই ছিল বন্দরনগরীর স্থায়ী জলাবদ্ধতা দূর করা।
প্রতি বছরই সিটি করপোরেশনের বাজেটে জলাবদ্ধতা নিরসনে বরাদ্দ থাকে। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নগরীর খাল-নালাও খনন করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রতিবছর আটকে যাওয়া বৃষ্টির পানিতে নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে। কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতেই বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
গতবছরও মৌসুমের প্রথম বর্ষণের পর মনজুর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, প্রতি বছর শুধু খাল-নালার মাটি কেটে জলাবদ্ধতা পুরোপুরি নিরসন সম্ভব নয়।
বুধবার সাধারণ সভা শেষে তিনি বলেন, “আগে চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা স্থায়ী ছিল। পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে অনেক জায়গায় দুই থেকে সাতদিন পর্যন্ত পানি জমে থাকত। এখন দুই থেকে সাত ঘণ্টা পানি জমে থাকে, যেটাকে জলজটের বেশি বলা যায় না।”
কর্ণফুলি নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ ‘জলজট’ বলে মেয়র মন্তব্য করেন।
নগরীর মধ্যে দিয়ে পানি প্রবাহের অন্যতম পথ চাক্তাই খাল সংলগ্ন রাস্তা নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করতে জেলা প্রশাসনকে চার বছর আগে করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হলেও এখনো জমি বুঝে পাননি বলে জানান মনজুর আলম।
জলজট নিরসনে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “স্থায়ী সমাধান পেতে কর্ণফুলীর তলদেশ চার থেকে পাঁচ মিটার ড্রেজিং করতে হবে, স্থায়ী বেড়িবাঁধ দিতে হবে। এটা পানি উন্নয়নের বোর্ডের কাজ।
“শহরের পশ্চিমে কাট্টলি থেকে পতেঙ্গা প্রায় ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধ তাতে মাত্র ১০ থেকে ১২টা স্লুইস গেইট আছে। এখানে পর্যাপ্ত স্লুইস গেইট নির্মাণ করতে হবে।”
স্লুইস গেইট নির্মাণে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলে মনজুর আলম জানান।