রাস্তার পাশের সড়ক দ্বীপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাইক্রোবাসের ধ্বংসাবশেষ। পাশেই পড়ে আছে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসের কয়েকটি চাকা, ইঞ্জিন, তেলের ট্যাংক, আসন।
Published : 01 Sep 2014, 07:43 PM
এই মাত্র ঘটে যাওয়া কোনো দুর্ঘটনার পরের চিত্র নয় এটি, তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে স্থাপিত এই স্মারকটির সব উপকরণই দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ির ধ্বংসাবশেষ।
প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরদের দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটির ধ্বংসাবশেষ দিয়ে এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের পাশের সড়কদ্বীপে তৈরি হয়েছে ‘সড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা’।
সোমবার নবনির্মিত স্থাপনাটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর ছাড়াও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুনের পরিকল্পনায় তৈরি হয়েছে এটি।
তারেক-মিশুকের সঙ্গে ২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট মানিকগঞ্জের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুনও ছিলেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় এবং শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদের নকশায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।
স্মৃতি স্থাপনা নির্মাণের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ বলেন, “এই ভাবনার পেছনে মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল বিধ্বস্ত গাড়িটি দেখার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি।”
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নীতি, আইন ও অবকাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে এই স্থাপনা বৃহত্তর কোনো আন্দোলনের অংশ হয়ে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, “যে স্মৃতিসৌধ এখানে তৈরি করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য কেবল তিন বছর আগের সেই ট্রাজেডিকে স্মরণ করা নয়, এর আসল উদ্দেশ্য সবাইকে প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয়া, সড়ক দুর্ঘটনায় যে মৃত্যু, তা নিছকই অপ্রয়োজনীয়।”
তিন বছর আগের ওই দুর্ঘটনায় টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীর ও চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ছাড়াও নিহত হন মাইক্রোবাসের চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ছিলেন তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ও শিল্পী ঢালী আল-মামুনের স্ত্রী দিলারা বেগম জলি।