দৈনিক ইনডিপেনডেন্টের সাবেক সম্পাদক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম মারা গেছেন।
Published : 06 Jun 2014, 10:59 AM
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
প্রবীণ এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শোক জানিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শোক বাণীতে বলেন, “তথ্য ও সংবাদ জগতের প্রাণপুরুষ মাহবুবুল আলম কখনো নীতিবিচ্যুত হননি। রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনেও তিনি অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।”
মাহবুবুলের আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
মাহবুবুল আলম গত কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন বলে তার সাবেক সহকর্মী গোলাম তাহবুর জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গত তিন দিন ধরে বারডেমে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন মাহবুবুল আলম। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
দীর্ঘ ১৮ বছর ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে গত বছর ১৯ অক্টোবর অবসরে যান মাহবুবুল আলম। ২০০৭ সালে ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্য উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।
তার তিন মেয়ে ও স্ত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।
শনিবার তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে জানিয়ে সাংবাদিক তাহবুর বলেন, তারা ফিরলে প্রয়াত সাংবাদিককে আজিমপুর কবরস্থনে দাফন করা হবে।
মাহবুবুল আলম মাহবুবুল আলম শুক্রবার দুপুরে মাহবুবুলের মরদেহ গুলশানে তার ছোট ভাইয়ের বাসায় নেয়া হয়। বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার প্রথম জানাজা হয়। পরে সন্ধ্যায় তার মরদেহ তেজগাঁওয়ে ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার কার্যালয়ের সামনে নেয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা হওয়ার পর মরদেহ গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।
১৯৩৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন মাহবুবুল আলম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে স্নাতকোত্তর করেন তিনি।
১৯৫৩ সালে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটস প্রেস অব পাকিস্তানে (এপিপি) কাজের মধ্য দিয়ে তার সাংবাদিকতার শুরু। কর্মজীবনে নিউ নেশন, সাপ্তাহিক ডায়ালগের সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি।
স্বাধীনতার পর প্রথমদিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবুল আলম।
এরপর লন্ডন হাই কমিশন ও ওয়াশিংটন দূতাবাসের বার্তা বিভাগে দীর্ঘদিন কাজ করেন তিনি।
এইচএম এরশাদের শাসনামলে মাহবুবুল আলম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহির্বিশ্ব বিভাগের মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
ভুটানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণ পদকসহ বিভিন্ন সন্মাননাও পান মাহবুবুল আলম।
তার মৃত্যুকে সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম ও ঢাকার প্রথম মেয়র ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত এবং সংবাদ সংস্থা বাসস-এর সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ পৃথক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেন।
এছাড়া ‘সম্পাদক পরিষদ’র সভাপতি গোলাম সারওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আলতাফ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ এক যৌথ বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেন।