ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের খবর এসেছে দেশটির সংবাদমাধ্যমে।
Published : 28 May 2021, 12:49 PM
এনডিটিভি জানিয়েছে, ২২ বছরের ওই তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের পর দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। গ্রেপ্তার সবাই একই গ্রুপের এবং সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের দুইজন নারীও রয়েছেন।
ঢাকার পুলিশ বলছে, গণমাধ্যম থেকে তারাও গ্রেপ্তারের খবর জেনেছেন। আর ওই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা।
হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আব্দুর রশীদ বলেন, “টিকটকার হৃদয় বাবুসহ কয়েকজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি করেছেন মেয়েটির বাবা। গণমাধ্যম থেকে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছি। তবে অফিসিয়াল চ্যানেলে এখনো ভারতের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।”
ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশকে উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার এনডিটিভি জানায়, নির্যাতনের ওই ঘটনাটি ঘটেছে ছয় দিন আগে। বিভৎস কায়দায় নির্যাতনের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি দেখার পর প্রথম পদক্ষেপ নেয় আসাম পুলিশ। ওই ভিডিও থেকে পাঁচ নিপীড়কের ছবি প্রকাশ করে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য টুইটারে পুরস্কারের ঘোষণা দেয় তারা।
These images are of 5 culprits who are seen brutally torturing & violating a young girl in a viral video.
The time or place of this incident is not clear.
Anyone with information regarding this crime or the criminals may please contact us. They will be rewarded handsomely. pic.twitter.com/ZnNjtK1jr6
— Assam Police (@assampolice) May 26, 2021
হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে বলা হয়, ওই ভিডিওর উৎস খুঁজতে গিয়ে আসাম পুলিশ জানতে পারে, নির্যাতনে জড়িতরা আছে বেঙ্গালুরুতে। তারপর সেই তথ্য কর্ণাটক পুলিশকে সরবরাহ করে তারা। পরে বেঙ্গালুরু পুলিশ ওই ভিডিওর সূত্র ধরে ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়।
বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের কমিশনার কামাল পান্ট টুইটারে জানান, এ ঘটনায় ধর্ষণ, নির্যাতন ও অন্যান্য অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে। তারা সবাই বাংলাদেশি বলে তারা ধারণা করছেন।
“আর নির্যাতনের শিকার তরুণীও বাংলাদেশী, তাকে পাচারের জন্য ভারতে আনা হয়েছিল।”
বেঙ্গালুরুর পুলিশ বলেছে, ঘটনার শিকার তরুণী এখন ভারতের অন্য একটি রাজ্যে রয়েছেন। তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার জন্য পুলিশের একটি দল গেছে। তাকে বেঙ্গালুরুতে নেওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে।
Based on the contents of the video and preliminary investigation, a case of rape and assault has been registered against 6 persons including 2 women at @ramamurthyngrps.
A police team has also been deputed to an adjoining state to trace the victim so that she could join.. (1/3)
— Kamal Pant, IPS (@CPBlr) May 27, 2021
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী ও নির্যাতনকারীদের একজন ঢাকার মগবাজার এলাকার। তবে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালায়। সাইবার পেট্রোলের অংশ হিসেবে ভিডিওটি পুলিশের নজরে আসে।
“যৌন নির্যাতনকারী একজনের চেহারার সঙ্গে মগবাজার এলাকার এক যুবকের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করা ছবির মিল পাওয়া যায়। ফেইসবুক আইডি ধরে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার মা ও মামাকে ভিডিওটি দেখানোর পর তারা স্বীকার করেন যে ভিডিওতে তার ছেলে রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু রয়েছেন। মগবাজার অধিবাসীদের অনেকেই তাকে চেনেন। হৃদয়ের বয়স ২৬ বছর।”
হৃদয়ের মা ও মামা পুলিশকে বলেছেন, ‘উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের’ কারণে চার মাস আগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে বাসার কারো সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই।
ঢাকার পুলিশ বলছে, হৃদয় ভারতের পুনেতে অবস্থান করার কথা তার পরিবারকে বলেছিলেন। ওই ভিডিওতে নির্যাতনের সময় হৃদয়ের সঙ্গে যাদের দেখা গেছে, তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
উপ কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ওই তরুণী মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। তিন মাস আগে হঠাৎ করে তিনি নিখোঁজ হন। তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না পরিবার।... অভিযুক্ত এবং ঘটনার শিকার তরুণীকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেবে পুলিশ “