বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও শক্তি সঞ্চয় করে পরিণত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে; অস্থিরমতি এই ঘূর্ণিবায়ু কোন উপকূলে আঘাত হানতে চলেছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।
Published : 07 Nov 2019, 11:51 PM
বুলবুলের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল এ ঝড়।
সে সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হতে পারে। রোববার নাগাদ পৌঁছাতে পারে উত্তর বঙ্গোপসাগরে।
“ঝড়ের শক্তি বাড়লে শুক্রবার সতর্কতার মাত্রাও বাড়ানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলীয় বাষ্প বাড়ায় উপকূলীয় এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।”
বার বার দিক বদলে নিম্নচাপটি আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে বুধবার রাতে তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। তখন এর নাম দেওয়া হয় বুলবুল।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তরের নির্ধারিত তালিকা থেকে ধারাবাহিকভাবে এই অঞ্চলের ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। বুলবুল নামটি নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে।
ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আরও শক্তিশালী হয়ে শুক্রবার বিকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হতে পারে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার।
তবে রোববার ফের শক্তি কমে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) রূপ পেতে পারে বুলবুল। তারপর ধীরে ধীরে আরও শক্তি হারিয়ে ১১ নভেম্বর ফের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছিলেন, অর্ধবৃত্তাকারে বাঁক নিয়ে বুলবুল পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল ধরে উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
আর বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ঝড়ের প্রভাব বাংলাদেশের ওপর কতটা পড়বে তা নির্ভর করবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে আসার পর বুলবুল কোন দিকে মোড় নেয় তার ওপর। শনিবার রাতে পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে সংকেত বাড়ানো হবে।
এখনও অনেক দূরে থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান পর্যালোচনা করে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিন দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।