নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ‘নব্য জেএমবির সদস্য’ ফরিদ উদ্দিন রুমি রাজধানীর গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ‘দায় স্বীকার করে’ জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 29 Sep 2019, 11:08 PM
এছাড়া রুমির সঙ্গে একই দিনে গ্রেপ্তার মিশুক খান মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও দুই দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত।
গত জুলাই মাসে পল্টনে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছ থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর রোববার দুই আসামিকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
এ আদালতে পল্টন থানার প্রসিকিউশন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন বলেন,ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম তার খাস কামরায় “১৬৪ ধারায় রুমির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি” রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আর এ মামলায় মিশুক খানকে আরও সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হলে একই বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলেন জানান মোতালেব।
রুমি আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একজন শিক্ষক। মিশুকও একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মিশুককে গ্রেপ্তারের পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা শিয়াচর এলাকায় রুমির বাবার বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। রুমিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি আইইডি, বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস এবং একটি খেলনা রাইফেল।
সেখানে পাওয়া বিস্ফোরকের সঙ্গে পুলিশের উপর সাম্প্রতিক কয়েকটি হামলায় ব্যবহৃত বোমার মিল রয়েছে বলে কাউন্টার টেররিজমের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম সেদিন জানিয়েছিলেন।
পল্টন থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রুমি ও মিশুককে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
ঢাকায় এ বছর প্রথম বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটে ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে। ওই সময় বোমা বিস্ফোরণে ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম, লিটন চৌধুরী ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্য মো. আশিক আহত হন৷
এরপর ২৬ মে মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) কার্যালয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা পুলিশের গাড়িতে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটলে এসআই রাশেদা খাতুন এবং এক রিকশাচালক আহত হন।
এরপর ২৩ জুলাই খামারবাড়ি এবং পল্টনে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে একই সময় দুইটি কার্টনে বোমার সন্ধান পায় পুলিশ। পরে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।
সবশেষ ঘটনাটি ঘটে গত ৩১ অগাস্ট মধ্যরাতে; স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের যাত্রাপথে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাতে একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল আহত হন।
প্রতিটি ঘটনার পরই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের পক্ষ থেকে হামলার দায় স্বীকারের খবর গণমাধ্যমে এলেও পুলিশ তা বরাবরই নাকচ করে এসেছে।