ডিজিটাল গণমাধ্যমের যুগে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ও প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই কীভাবে সফল হতে পারে তা নিয়ে তা নিয়ে চার বিশেষজ্ঞের আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব গণমাধ্যম সম্মেলনের এবারের আসর।
Published : 14 Jun 2018, 02:03 PM
জার্মানির বন শহরে ডয়চে ভেলের উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনের বার্ষিক সম্মেলন গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম (জিএমএফ) বুধবার শেষ হয়।
শেষ দিনে ডয়চে ভেলে আকাডেমি আয়োজিত ‘ফোর অ্যাগেইনস্ট ফেইক: মিডিয়া অ্যান্ড ইনফরমেশন লিটারেসি ইন দ্য ডিজিটাল এইজ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় চার আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
ভিন্ন সংস্কৃতি, সমাজ ও দর্শক-শ্রোতার কথা বিবেচনায় রেখে ডিজিটাল গণমাধ্যম পরিসরে ‘ভুয়া সংবাদ ও প্রপাগান্ডা’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পদ্ধতি দিয়ে আলোচনা করেন তারা।
‘পৃথিবীতে বৈষম্য কেন বাড়ছে? বৈষম্যের কারণেই কি মানুষ দেশান্তরী হয়? এক্ষেত্রে গণমাধ্যম কী ভূমিকা পালন করতে পারে?- এ রকম অসংখ্য প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর খুঁজতে সোমবার শুরু হয়েছিল তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলন।
গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামের ১১তম এই আয়োজনে সমাজে বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের ভুমিকা প্রশ্নে সবার কণ্ঠস্বর সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রচারের বিষয়ে একমত হয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা; ১২০টি দেশ থেকে দুই হাজার তিনশোর বেশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, গণমাধ্যম উদ্যোক্তা, কর্মী, এনজিওকর্মী, ব্লগার অংশ নেয়।
“We as journalist can not always insist that we don’t get it wrong. Because then the first time we make a mistake, we get painted into the #FakeNews corner.” - @julianevrb of @LieDetectorsOrg at #dw_gmf pic.twitter.com/mIgqjLTZvd
— Global Media Forum (@DW_GMF) June 13, 2018
রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে ভূয়া খবরের প্রভাব ও তার প্রতিকার নিয়েও আলোচনাসহ মোট ৮৩টি সেশনে বিষয়ধর্মী আলোচনা, প্রশিক্ষণ, মতবিনিময়, প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন ছিল এবার৷ সেখানে একদিকে সমাজে অসমতা ও বৈষম্য দূর করতে সাংবাদিকতার মানসম্মত শিক্ষা ও পেশাগত চর্চার প্রসঙ্গ উঠে আসে, তেমনি সামাজিক গণমাধ্যমের এই যুগে প্রযুক্তি কীভাবে এতে ভূমিকা রাখতে পারে আলোচনা হয় সে বিষয় নিয়েও৷
এছাড়া সমাজের বিভিন্ন অনগ্রসর গোষ্ঠীকে কীভাবে আরো সামনে নিয়ে আসা যায়, তথ্যপ্রযুক্তিকে কীভাবে তাদের কাছে আরো সুলভ ও সহজলভ্য করা যায় সেসব বিষয়েও মতামত ও নতুন নতুন ধারণা তুলে আনা হয়েছে৷
তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগের নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে সারাবিশ্বে সমাজ পরিবর্তনে কাজ করে যাওয়া তরুণদেরও পরিচয় করিয়ে দেয় এই মঞ্চ৷
সব মানুষের কণ্ঠস্বর সবার কাছে পৌঁছাতে এবং বৈষম্য কমাতে বেশি করে বিকল্প কণ্ঠস্বর তুলে ধরার মাধ্যমে গণমাধ্যমকে আরো দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার উপর সবাই গুরুত্ব জোর দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার সকালে ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সেন্টারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের প্রেসিডেন্ট আরমিন লাশেট৷
এবারের সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই; সম্মেলনে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে সাহসী সমালোচনার জন্য সেদেশের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সাদেঘ জিবাকালামকে বাকস্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ নিয়ে ডয়চে ভেলের তৈরি প্রায় ৪২ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘দ্য ডন অফ ইসলামিজম ইন বাংলাদেশ' এছাড়া দেখানো প্রদর্শিত হয়৷
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ছিল নানা পরিবেশনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ডয়চে ভেলে ও জার্মানির আরেক প্রচারমাধ্যম ডাব্লিউডিআর-এর কয়্যার বেটোফেনের নবম সিম্ফনি থেকে ‘ওড টু জয়' পরিবেশন করেন৷ ভারতের তরুণ ব়্যাপার গিন্নি মাহিরও একটি পরিবেশনা ছিল; ছিল জ্যাজ মিউজিক৷
সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগর, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন, আরটিভির প্রধান নির্বাহী আশিক রহমান, ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক ও বার্তাকক্ষ প্রধান জাহিদুল কবির এবং প্রথম আলোর উপ-সম্পাদক মিজানুর রহমান খান।