মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
Published : 14 Sep 2017, 12:21 AM
সেখানে সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রাখাইনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সেনা অভিযানে হত্যা-অগ্নিসংযোগের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গার ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার এই সংকট নিয়ে আলোচনায় বসে নিরাপত্তা পরিষদ।
বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ১৫ সদস্যের এই কাউন্সিল মিয়ানমারের রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অতিরিক্ত সহিংসতার খবরে উদ্বেগ জানিয়েছে।
“রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ, পরিস্থিতির উত্তরণ, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।”
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিল পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্য ও অস্থায়ী সদস্য সুইডেন।
বৈঠকের পর জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফট বলেন, গত নয় বছরের মধ্যে এই প্রথম মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতিতে সম্মত হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।
মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে চীনের, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিয়োজিত দেশটির রাষ্ট্রদূত চলমান এই সংকটের জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করেন।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
পরদিন থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল। কয়েকশ দশক ধরে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে নতুন করে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা এসেছে।
নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকের আগে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাখাইনে সেনা অভিযান স্থগিত এবং রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতা বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নিউ ইয়র্কে সংস্থাটির সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে।
“গত সপ্তাহে যখন আমরা মিলিত হয়েছিলাম সে সময় এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। এই সংখ্যা এখন তিনগুণ হয়ে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার হয়েছে।
এই সংকটকে জাতিগত নির্মূল বলা যায় কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জনগোষ্ঠীর (রোহিঙ্গাদের) এক তৃতীয়াংশকে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে-এটাকে বোঝানোর জন্য আপনি কি আর কোনো ভালো শব্দ পাবেন?”