ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণে বাধা পাওয়ার পর এবার নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়িতে স্থাপনা নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছে পুলিশ।
Published : 11 Jan 2017, 07:24 PM
শিক্ষার্থীদের কাছে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর দুদিন আগে কাজ বন্ধ করে দিয়ে এলেও এখন তিনি স্বীকার করেছেন, ক্যাম্পাসে কর্মরত পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্যদের বসার জন্য ওই স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে এসবি সদস্যদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনে ক্যাম্পাসের বাইরে কর্মরত শাখাটির সদস্যরাও বসবেন বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের কথায় জানা গেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় পুলিশের নিজস্ব স্থাপনা নির্মাণের এই উদ্যোগে ক্ষোভ জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা। তারা অবিলম্বে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পুলিশের দুটি ফাঁড়ি রয়েছে; একটি এফ রহমান হলের পাশে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি, অন্যটি আনোয়ার পাশা আবাসিক এলাকা লাগোয়া বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ি।
গত বছরের মাঝামাঝিতে বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের জন্য ২০ তলা ভবন তৈরির একটি উদ্যোগ নেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের তৎপরতায় তা বন্ধ হয়ে যায়।
এবার অন্য ফাঁড়ি নীলক্ষেতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফাঁড়ির টিনশেড ঘরের পাশে মাটি খুঁড়ে নতুন স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পাশে রাখা আছে নির্মাণ সামগ্রী ইট ও বালির স্তূপ।
টিনশেড ওই ঘরের সর্ব দক্ষিণের কক্ষটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপালনকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা বসেন। সেখানে প্রতিটি গোয়েন্দা সংস্থার জন্য আলাদা টেবিল রয়েছে। মোট তিনটি টেবিল ছাড়াও কক্ষটির পূর্ব পাশে শোয়ার জন্য একটি খাটও রয়েছে।
স্থাপনা নির্মাণের খবর পেয়ে দুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আবার কাজ চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসবির জন্য একটি স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
“তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্থাপনাটিতে শুধুই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বসবেন।”
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের বক্তব্যের সঙ্গে এসবি কর্মকর্তাদের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি।
এসবির নিউ মার্কেট-কলাবাগান জোনের পরিদর্শক ফরিদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়েই এই স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে।
“নির্মিতব্য অফিসটিতে এসবির নিউ মার্কেট, কলাবাগান জোনের সদস্যরা বসবেন। পরবর্তীতে যদি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুমতি দেন, সেক্ষেত্রে অন্যান্য জোনের সদস্যদেরও বসতে দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণে পুলিশের এই উদ্যোগের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তুহিন কান্তি দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে কোনোভাবেই হোক, এ স্থাপনা হতে দেওয়া হবে না। আমরা এটি প্রতিহত করব।”
ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, “আমরা সাধারণ ছাত্রদের সাথে নিয়ে এটি প্রতিহত করব।”