শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দায় সরব প্রতিবাদ দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
Published : 30 Aug 2015, 08:26 PM
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেখা গেছে অসংখ্য, কেউ কেউ স্ট্যাটাস দিয়ে তিরস্কার করেছেন ছাত্রলীগকে।
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষক জোটের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় শিক্ষকদের লাথি মারতেও দেখা গেছে।
নারী শিক্ষকরাও তাদের মারধর থেকে রেহাই পাননি; ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন অধ্যাপক ইয়াসমীন হক।
শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের এমন হামলার পরপরই নিজের ফেইসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল লিখেন, “ছি!”
প্রায় দুই দশক আগে মাহবুবুল আলম শাকিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন।
আর হামলাকারী শিক্ষার্থীদের ছাত্র বলতেও নারাজ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, যিনি নিজেও ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
“মায়ের পেটের শিশু থেকে শিক্ষক; আপনারা আমাদের আর লজ্জা দেবেন না প্লিজ!”
ব্লগার আরিফুর রহমান লিখেছেন, “জাফর ইকবাল তার সাম্প্রতিক টিভি ভাষ্যে নিতান্ত শিশুর মতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর জয় বাংলা স্লোগানের দিয়ে ছাত্র নামধারী গুণ্ডাদের ঝাঁপিয়ে পড়া দেখে।
“উনি মনে হয় এখনো বুঝে উঠতে পারেন নাই, এই দেশে রাজনীতিকদের অন্য কিছু চোখে পড়ে না। তারা শুধু সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী কিংবা প্রতিপক্ষ খুঁজতে থাকেন।”
নিজের ফেইসবুকে কভার ফটো হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বৃষ্টিতে ভেজার ছবি আপলোড করে নিন্দা জানিয়েছেন ব্লগার আরিফ জেবতিক।
জাহাঙ্গীর আলম খান নামে একজন আরিফ জেবতিকের ছবির নিচে মন্তব্য করেছেন, “উনি কবে বুঝবেন- জয়বাংলা কবেই লুট হয়ে গেছে গণমানুষের মুক্তি আন্দোলন থেকে এক ঝাঁক লুটেরাদের কাছে !”
প্রত্যয় ভৌমিক নামে এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “বুঝলাম এটা টিচারদের পলিটিক্স। কিন্তু উনি কেমন ভিসি যিনি তার সহকর্মীদের উপর ক্যাডারদের লেলিয়ে দিলেন। এখানেই বোঝা যাচ্ছে ভিসি হিসেবে উনার যোগ্যতা কতটুকু।”
মুহাম্মত ইসমাইল লিখেছেন, “এটা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একটি মাত্র নমুনা, আরো কত আদর্শতো বাকিই আছে। সাবাশ! ছাএলীগ তোমাদের জন্য সবই জায়েজ, চলিয়ে যাও সোনার ছেলেরা।”
মাহবুব রাজীব নামে একজন লিখেছেন, “এই ঘটনাগুলো অনেক কষ্ট দেয়। বিশেষ করে সভানেত্রীর জন্যেই বেশি খারাপ লাগে। এতো পরিশ্রম উনি করেন অথচ আমরা সব শেষ করে দিই।”
তাদের এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ‘অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যের পক্ষে রয়েছেন সরকার-সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ।
অচলাবস্থা কাটাতে দুই পক্ষের সঙ্গেই বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নিয়োগ, নতুন ব্যবস্থা চালু বা কাউকে নতুন কোনো পদে দায়িত্ব দিতে নিষেধ করে উপাচার্যের ক্ষমতা কার্যত খর্বও করা হয়েছে।
তারপরও আমিনুল হক ভূইয়া উপাচার্য পদ না ছাড়ায় শিক্ষকরাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।