দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যে আপিল বজলুর রশীদ করেছেন, তার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
Published : 29 May 2023, 05:41 PM
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কারা অধিদপ্তরের সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) বজলুর রশীদকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
দুদকের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও ব্যারিস্টার হুমায়ূন কবির পল্লব।
আইনজীবী খুরশীদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যে আপিল বজলুর রশীদ করেছেন, তার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগের বেঞ্চ।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৫ এপ্রিল বজলুর রশীদকে জামিন দেয়। ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক।
৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে গত বছরের ২৩ অক্টোবর বজলুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন।
দুদকের করা এ মামলায় কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে তাকে।
যে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য এ মামলায় এসেছে, তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও সিদ্ধান্ত দেয় জজ আদালত।
এরপর বজলুর রশীদ খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন। গত ৩ নভেম্বর তা শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। একইসঙ্গে তার জরিমানা স্থগিত করে নিম্ন আদালতের নথি তলব করা হয়।
ওই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন সাবেক এই কারা কর্মকর্তা।
১৯৯৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বজলুর রশীদ ঢাকায় সর্বশেষ কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার আগে ডিআইজি হিসেবে ছিলেন রাজশাহীতে।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে ডিআইজি প্রিজনস (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে তিনি পাঠিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার।
এজন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
এরপর এই কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুদকের তলবে হাজির হলে ওই বছর ২০ অগাস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে। পরে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন-