আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন আরজু, বিচারক তা নাকচ করে দেন।
Published : 22 Feb 2023, 01:38 PM
প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করার মামলায় পাবনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরজু বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক বেগম সামছুন্নাহার।
এ ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আসগর স্বপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
পিবিআইয়ের দেওয়া প্রতিবেদন আমলে নিয়ে একই আদালত গত ১৬ জানুয়ারি খন্দকার আজিজুল হক আরজুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সেই পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখ রেখেছিলেন বিচারক।
একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী ২০২২ সালের এপ্রিলে সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে এই মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বাদীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সে সময় তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন এবং নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। তার আত্মীয়-স্বজনরা তাকে আবারও বিয়ে করার জন্য চাপ দেন।
ধর্ষণ মামলায় পাবনার সাবেক সাংসদ আরজুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা
একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষ দিকে চাচার মাধ্যমে বাদীর পরিচয় হয় খন্দকার আজিজুল হক আরজুর সঙ্গে। আরজু জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। পরে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
অভিযোগে বলা হয়, সন্তান গর্ভে আসার পর নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন আরজু। কিন্তু বাদীর দৃঢ়তায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আরজুর আচার-আচরণে পরিবর্তন আসে, তিনি বাসায় আসা কমিয়ে দেন।
আর্জিতে বলা হয়, আরজু বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বললে তার বাবা ১৮ লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দিলেও আসামি কোনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি। একপর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে খোঁজ নিয়ে বাদীপক্ষ জানতে পারেম আরজুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। সে ঘরে একটি কন্যাসন্তান আছে।
তখন তারা জানতে পারেন, আসামি এর আগে নিজের নাম ফারুক হোসেন বললেও আসলে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু।
অভিযোগে বলা হয়, মিথ্যা তথ্য ও পরিচয় দিয়ে বাদীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্যই বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন ওই ব্যক্তি। পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পর আসামি কয়েকবার নিজে এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে আসামি তার সঙ্গে বিয়ে এবং কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ই অস্বীকার করেন।
মামলা হওয়ার পর বিচারক বাদীর জবানবন্দি শুনে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে গত ৫ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম। সেখানে বলা হয়, তদন্তে বাদীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।