ধর্ষণ মামলায় পাবনার সাবেক সাংসদ আরজুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা

অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2023, 07:11 PM
Updated : 16 Jan 2023, 07:11 PM

ধর্ষণের মামলায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

সোমবার বিকালে এ আদেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার।

বাদীপক্ষের আইনজীবী লিটন মিয়া বলেন, “গত বছর মামলাটি দায়ের করা হয়। ট্রাইব্যুনাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। 

“পিবিআই তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই প্রতিবেদন সোমবার ট্রাইব্যুনাল আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।”

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আসগর স্বপন জানান, এ দিন তিনি আদালতে যাননি, তবে এ আদেশের কথা শুনেছেন।

বিচারক আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলাটি করেন। ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দেন। তদন্তের পর ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআই’র পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম গত ৫ জানুয়ারি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালের শেষ দিকে স্বামী বাইরে থাকায় বাদী প্রায় নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। এ কারণে তার আত্মীয়-স্বজনরা তাকে ফের বিয়ে করতে চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষ দিকে চাচার মাধ্যমে আসামির সঙ্গে পরিচয় হয় বাদীর। পরে আসামি নিয়মিত বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে সফল হয়।

বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, আসামি তাকে জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন; সামাজিক নির্ভরতা ও একাকিত্বের অবসান ঘটাতে তিনি নতুন সংসার শুরু করতে চান। পরে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। 

২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয় উল্লেখ করে বাদী মামলায় বলেছেন, সন্তান গর্ভে আসার পর আসামি বিভিন্ন ‘ছলছাতুরির’ মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাদীর অনমনীয় মনোভাবের কারণে তা সম্ভব করতে পারেননি আসামি।

ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার ১৮ লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দেন উল্লেখ করে বাদী অভিযোগ করেছেন, আসামি সেই ফ্ল্যাট কিনে দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। একপর্যায়ে বাদীর বাসায় আসা বন্ধ করে দেন আসামি। 

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, পরে বাদী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন-আসামির প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। সেই ঘরে কন্যাসন্তান আছে এবং স্ত্রীর সঙ্গেই থাকেন আসামি। তাছাড়া বাদীর কাছে আসামি নিজেকে ফারুক হোসেন নামে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু।

শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বিয়ের নামে প্রতারণা করা হয়েছে অভিযোগ করে এতে বলা হয়, আসামি কয়েকবার নিজে এবং ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীকে দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে আসামি বাদীর সঙ্গে বিয়ে এবং তার ঔরসের সন্তানকে অস্বীকার করেন।

মামলার তদন্তে বাদীর কন্যা সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। তাতে কন্যাসন্তানটি বাদীর গর্ভজাত এবং আসামি আজিজুল হক আরজুর ঔরসজাত বলে প্রতিবেদন এসেছে বলে মামলার নথি থেকে জানা যায়।

অভিযোগের বিষয়ে আরজুর কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।