চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পাঁচ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি তিন প্রার্থীও তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
Published : 28 Nov 2018, 02:57 PM
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সিটি মেয়র ও দলের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে সাথে নিয়ে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এসময় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীও ছিলেন ।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী) আসনে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনে ডা. আফসারুল আমীন, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দিদারুল আলম মনোনয়ন জমা দেন।
এর আগে বিএনপির দুই প্রার্থী এম মোরশেদ খান ও আবদুল্লাহ আল নোমান তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান চট্টগ্রাম-৮ ও নোমান চট্টগ্রামে-১০ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন। এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন জমা দেন।
নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়ে নোমান বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমরা নির্বাচনে এসেছি। জাতীয় পর্যায়ে ঐক্য হয়েছে, আমরা আলোচনায়ও আছি আন্দোলনেও আছি।
গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।
মোরশেদ খান বলেন, নতুন প্রজন্ম দুই বার ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নির্বাচনের পর দেশকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা সব দল মিলে ঠিক করতে হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে কেমন মনে করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব প্রার্থীই শক্তিশালী।
সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবির বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা আওয়ামী লীগের বলাটা হাস্যকর। ২০১৪ সালের ভোটের পুনরাবৃত্তি হয় কিনা তার আশংকা এখনো রয়েছে। জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা চলছে তা ষ্পষ্ট।”
দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতারাও। এসময় তারা বিএনপি প্রার্থীর নানা অভিযোগের জবাব দেন।
নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ না থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, মিথ্যাচার করাটা তাদের অভ্যাস।
চট্টগ্রামে নৌকার বিজয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশ পরিচালনা করে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেছেন। আশা করি জনগণ ভোট দিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবে।”
আফসারুল আমীন বলেন, ‘‘সুষ্ঠু পরিবেশ হয়নি বলছে তবু তো তারা নির্বাচনে এসেছে।”
চট্টগ্রাম-৮ আসনে নৌকার প্রার্থী মইনুদ্দিন খান বাদল বিএনপি নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, “নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। তাদের (বিএনপি) যেগুলো নিয়ে সমালোচনা ছিল যেমন প্রটোকল, উদ্বোধন, সেগুলো পরিহার করেছি।
‘‘নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৫ দিন আগে সেনাবাহিনী নিয়োগ করবে, যেভাবে তারা চেয়েছেন। এতকিছুর পরও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়নি?’’
শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন করা ছাড়া বিএনপির আর কোনো পথ নেই।
দিদারুল আলম বলেন,“ সীতাকুণ্ডে ১৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী উনার প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। পাঁচ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সীতাকুণ্ডের জনগণের পাশে ছিলাম। সবাইকে নিয়েই জয় নিশ্চিত করব।”
কোতয়ালী আসনের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “আশা করি আজকে যেমন সুন্দরভাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছি তেমন সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের তিনশ আসনের মধ্যে যে ছয়টিতে ইভিএম হবে তার মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ অন্যতম।
“এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, ইভিএমের মাধ্যমে তিনি আগামী প্রজন্মের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও স্বচ্ছ ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চান।”