প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সুযোগ তাদের নেই, ফলে তফসিলও পেছানোর উপায় নেই।
Published : 06 Nov 2018, 12:05 PM
মঙ্গলবার নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার এ মন্তব্য আসে।
সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, “তার বাইরে তো আমরা যেতে পারব না্।… তফসিল পেছানোর কোনো উপায় নেই। আমরা তফসিল পেছাব না।”
অবশ্য সব দল চাইলে সংবিধান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে থেকে কমিশন ভোটের সময়সূচি কয়েকদিন পেছানোর কথা ভাবতে পারে বলে জানান নূরুল হুদা।
তিনি বলেন, “এর মধ্যে যদি সকল রাজনৈতিক দল বলে কয়েকদিন পিছিয়ে দেন- তখন আমরা পিছিয়ে দেব।”
ডিসেম্বরের শেষভাগে একাদশ জাতীয় নির্বাচন করতে আগামী ৮ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে সিইসির।
তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে আসা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রয়োজনে তফসিল পিছিয়ে দিয়ে তাদের দাবি পূরণের কথা বলে আসছে।
জানুয়ারিকে ‘ডিসটার্বড’ মাস হিসেবে বর্ণনা করে সিইসি বলেন, “আপনারা জানেন, জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা হয়। আমি যতদূর জানি, ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই দফায় হবে। ওটা যদি হয়, তাহলে ১৫ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।”
তাছাড়া ইজতেমার কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টঙ্গীতে নিয়ে আসতে হয় জানিয়ে সিইসি বলেন, “পুরো জানুয়ারি মাসটাই ইজতেমার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যস্ত থাকতে হয়। আবার জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে স্কুলগুলো খোলা থাকে। স্কুলের টিচার যারা তাদের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকতে হবে। সে কারণে পাঠ্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটবে। আবার জানুয়ারিতে শীত থাকে, কুয়াশা থাকে। চর অঞ্চলে নদীপথে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্যই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত।”
নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্টদের তালিকা নিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা চিহ্নিত হয়ে যাবেন এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে যে আশঙ্কা দলটির রয়েছে- সে বিয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, “এটা ঠিক না। তারা যদি প্রশিক্ষণ নিতে না চায়, তাহলে নিবে না। এটা তাদের ইচ্ছা। তাদের সন্দেহ থাকলে তারা পাঠাবে না।”
নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের যেন ‘বিনা কারণে’ মামলা দেওয়া না হয়, সে নির্দেশনা ইসির তরফ থেকে দেওয়া আছে বলে জানান নূরুল হুদা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে নির্বাচনে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন ইভিএম ব্যবহারে জনগণের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না, তবে আমাদের জানাবেন। জনগণের স্বার্থ রক্ষা না হলে ইভিএম জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হবে না।”
আগামী নির্বাচনে সীমিত আকারে শহরাঞ্চলে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, “ইভিএম কোথায় ব্যবহার করা হবে তা কমিশনের হাতে থাকবে না, কেননা তা দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে হবে।”
অন্যদের মধ্যে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।