থুনবার্গসহ আরো তিনজনকে আগামী ২৪ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Published : 06 Jul 2023, 10:18 PM
‘পুলিশের নির্দেশ অমান্য করার’ অভিযোগে এবার আদালতে বিচার হবে প্রখ্যাত সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের।
আগামী ২৪ জুলাই তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিবিসি।
কিশোর বয়স থেকেই জলবায়ু আন্দোলন নিয়ে কাজ করে আসা গ্রেটার বয়স এখন ২০ বছর।
গত মাসে একদল তরুণ পরিবেশ কর্মী সুইডেনের মালমো বন্দরে ঢোকার মুখে টানা অবস্থান নিয়ে বন্দরে তেলের ট্যাংকার প্রবেশে বাধা দেয়। ওই পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে থুনবার্গও যোগ দিয়েছিলেন।
টানা ছয়দিন ধরে তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যান। ওই সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারী তেলের ট্যাংকারের উপরও চড়ে বসেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও তারা তা অমান্য করে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
ওই সময় ইন্সটাগ্রামে এক পোস্টে থুনবার্গ লেখেন, ‘‘জলবায়ু সংকট এরইমধ্যে অগণিত মানুষের জীবন-মরণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘‘আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসব দেখবো না বরং নিজেরাই জীবাশ্ম জ্বালানির অবকাঠামোগুলো বন্ধ করবো।”
থুনবার্গকে আদালতে তলবের বিষয়ে সুইডিশ প্রসিকিউশন অথরিটি থেকে বলা হয়, ‘‘প্রসিকিউটর একজন তরুণীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন যিনি এই বছরের ১৯ জুন একটি জলবায়ু বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। প্রসিকিউশনের মতে, ওই বিক্ষোভ মালমোতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল।”
থুনবার্গসহ আরো তিনজনকে আগামী ২৪ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানায় তারা।
এ বিষয়ে জানতে বিবিসি থেকে থুনবার্গের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার একজন প্রতিনিধি জানান, তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না।
যদি বিচারে গ্রেটা বা বাকিরা দোষী সাব্যস্ত হন তবে তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা হতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
থুনবার্গের সঙ্গে যাদের আদালতে ডাকা হয়েছে তাদের এজন ২০ বছরের ইরমা শেলসত্রেম।
তিনি বিবিসিকে বলেন, পুলিশ তাকে বন্দর ত্যাগ করতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তাদের কথা শোনেননি। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জোর করে সরিয়ে দেয়।
‘‘জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করার জন্য আমরা বন্দর অবরোধ করেছিলাম। যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে।
‘‘প্রকৃত অপরাধকাণ্ড চলছে বন্দরের ফটকের ভেতরে।
বন্দরের গেটের ভেতরেই চলছে প্রকৃত অপরাধ। জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প আমাদের কাছ থেকে আমাদের স্বপ্ন ছিনিয়ে নেবে আর আমরা বসে বসে সেটা দেখবো আর অপেক্ষা করবো, এমনটা হবে না।”
ইতিহাসের উষ্ণতম দিন দেখল বিশ্ব
জার্মানিতে খনি বিরোধী প্রতিবাদ থেকে আটক গ্রেটা থুনবার্গ, পরে মুক্তি
আদালতের রায়ে কী সাজা হতে পারে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই তরুণী আরো বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগতভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প আমাদের পৃথিবীর যে ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছে সেটা নিয়ে বরং বেশি উদ্বিগ্ন।
‘‘যেহেতু তারা বিশ্বকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছে, তাই আমিও থামবো না।”
যেসব কারণে জলবায়ুতে গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বেড়ে যাচ্ছে তার অন্যতম হলো জীবাশ্ম জ্বালানি।
প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বর্তমানে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে।
বিশ্বজুড়ে পরিবেশকর্মীরা তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে।
এদিকে, অধিকাংশ তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি বলছে, তারা কেবলমাত্র বৈশ্বিক চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় তেল ও গ্যাস উৎপাদন করছে।
জ্বালানি কোম্পানি ‘শেল’ এর প্রধান বিবিসিকে বলেন, তেল ও গ্যাসের উৎপাদন কমিয়ে দিলে তা ‘বিপজ্জনক এবং দায়িত্বজ্ঞনহীন’ হবে।
এদিকে, বিশ্বের তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত নতুন রেকর্ড গড়ছে। গত মঙ্গলবার বিশ্ব সবচেয়ে গরম দিন দেখেছে।