বিদ্রোহ শেষে রোস্তভ-অন-দনের সামরিক ঘাঁটিতেই প্রিগোজিনকে শেষবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল, তারপর থেকেই তার অবস্থান রহস্যে ঘেরা।
Published : 06 Jul 2023, 03:59 PM
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষণস্থায়ী একটি বিদ্রোহের জন্ম দিয়ে গত মাসে বিশ্বের সবার দৃষ্টি কেড়ে নেওয়া ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এখন রাশিয়ায় আছেন বলে জানিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।
প্রিগোজিন বেলারুশে নির্বাসনে যাবেন এবং বিদ্রোহে অংশ নেওয়া ওয়াগনার যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- এসব শর্তে গত মাসে প্রিগোজিনের ওই ২৪ ঘণ্টা মেয়াদী হট্টগোলের ইতি ঘটেছিল। তার কয়েকদিন পর প্রিগোজিন বেলারুশে যান বলে লুকাশেঙ্কো সাংবাদিকদের নিশ্চিতও করেছিলেন।
বিদ্রোহ শেষে রোস্তভ-অন-দনের সামরিক ঘাঁটিতেই প্রিগোজিনকে শেষবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল, তারপর থেকেই তার অবস্থান রহস্যে ঘেরা।
বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, লুকাশেঙ্কো বৃহস্পতিবার মিনস্কে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রিগোজিনের রাশিয়ায় ফেরার বিষয়টি জানান।
“তিনি এখন রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেইন্ট পিটার্সবার্গে, হয়তো মস্কোতেও গিয়ে থাকতে পারেন, তবে তিনি আর বেলারুশের ভূখণ্ডে নেই,” সাংবাদিকদের বলেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট।
জুনে রাশিয়ায় ওয়াগনারের যে বিদ্রোহ হয়েছিল, লুকশেঙ্কোর মধ্যস্থতাতেই তার সমাপ্তি ঘটেছিল।
ওয়াগনারের কিছু ইউনিটের বেলারুশে ঘাঁটি গাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেও জানিয়েছেন দীর্ঘদিন বেলারুশের ক্ষমতায় থাকা এ শাসক।
রাশিয়া এবং ওয়াগনারই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, বলেছেন তিনি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বুধবার প্রিগোজিনকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করার পাশাপাশি ওয়াগনারের বিদ্রোহ নিয়ে তদন্ত গুরুত্ব সহকারে হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
লুকাশেঙ্কো বলেছেন, শিগগিরই তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন এবং প্রিগোজিনকে নিয়ে কথা বলবেন।
“প্রিগোজিন পুরোপুরি মুক্ত, পুতিন তাকে মুছে ফেলবেন না,” বলেছেন তিনি।
ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি জেট বিমান বুধবার সেইন্ট পিটার্গবার্গ থেকে মস্কো এবং বৃহস্পতিবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দিকে উড়ে গেছে বলে জানাচ্ছে বিমান চলাচলের খোঁজখবর রাখা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য। তবে সেই বিমানে প্রিগোজিন ছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ওয়াগনারের কিছু ইউনিটকে বেলারুশে রাখার যে প্রস্তাব তা এখনও বহাল আছে।
“আমরা সেনাশিবির বানাচ্ছি না। আমরা তাদেরকে ওসিপভিচির কাছে অবস্থিত শিবিরসহ বেশ কয়েকটি সেনাশিবির, যেগুলো সোভিয়েত আমলে ব্যবহৃত হত, সেগুলো ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছি। যদি তারা রাজি হয়। কিন্তু ওয়াগনারের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা, অবশ্যই আমি ওই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কিছু বলবো না,” বলেছেন তিনি।
ওয়াগনারের উপস্থিতি বেলারুশের জন্য হুমকি নয় মনে করা লুকাশেঙ্কো বলেন, ভাড়াটে এই বাহিনী কখনোই বেলারুশের সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে না বলেই তার বিশ্বাস।