ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র ডাল লেকে কয়েকটি হাউজবোটে আগুন লেগে তিন বাংলাদেশি পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে ডাল লেকের নয় নম্বর ঘাটের কাছে আগুনের সূত্রপাত হয়।
প্রথমে একটি হাউজবোটে আগুন লাগে এবং পরে তা পাশে নোঙ্গর করে রাখা আরো চারটি হাউজবোটে ছড়িয়ে পড়ে।
রয়টার্স লিখেছে, পুড়ে যাওয়া পাঁচটি হাউজবোটের মধ্যে একটিতে তিন বাংলাদেশি পর্যটক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় আরো সাতজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশের এক বিবৃতির বরাতে ইনডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছেন, নিহত তিন বাংলাদেশির নাম অনিন্দ্য কৌশল, দাশ গুপ্ত এবং মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন। তারা সাফীনা নামের একটি হাউজ বোটে ছিলেন।
তাদের পরিচয় পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ নমুন সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ওই তিনজনের মধ্যে অনিন্দ্য কৌশল রাঙামাটি গণপূর্ত কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী, ইমন দাশ গুপ্ত একই বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং মাইনুদ্দিন একজন ঠিকাদার বলে রাঙামাটির কর্মকর্তাদের ধারণা।
গণপূর্তের রাঙামাটি কার্যালয়ের উপ সহকারী প্রকৌশলী জয় বড়ুয়া বলেন, “স্যার (অনিন্দ্য কৌশল) গত ৩ নভেম্বর ভারতে গেছেন। তিনি আজমীর শরীফ যাওয়ার কথা। সেখান থেকে কাজ শেষে কাশ্মীরে যাচ্ছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই ঘটনা... । কিছুই বুঝতে পারছি না।”
ইমন ও মাইনুদ্দিনকেও চিনতেনচলেজানিয়েছেনজয়।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান বলেন, “নির্বাহী প্রকৌশলী ভারতে আছেন সেটা জানি। তিনি খুবই ভালো মানুষ। এমন ঘটনা শুনে খুব খারাপ লাগছে। আমি খবর নিচ্ছি।”
রয়টার্স লিখেছে, প্রাথমিক তদন্তে ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার কথা জানিয়েছেন কাশ্মিরের কর্মকর্তারা।
কাশ্মীর বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে বরাবরই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে শ্রীনগরের ডাল লেক। বহু পর্যটক ডাল লেকে হাউজবোটে থেকে লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
সরকারি তথ্য অনুসারে ২০২২ সালে এক কোটি ৬২ লাখের বেশি পর্যটক জম্মু ও কাশ্মীরে বেড়াতে গেছেন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হওয়ার পর যা এক বছরে সর্বোচ্চ পর্যটকের আগমন।
অঞ্চলটি তুষার ঢাকা হিমালয় পর্বত, দ্রুত প্রবাহমান নদী, তৃণভূমি এবং সুন্দর হ্রদ ঘিরে কাঠের হাউজবোটের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয়।
কাশ্মীরে কয়েক দিন আগেই এ মৌসুমের তুষারপাত শুরু হয়েছে। যা দেখতে এরইমধ্যে যেখানে লাখ লাখ পর্যটক জড়ো হয়েছেন।