চীনের তড়িঘড়ি কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কারণে ২০২৩ সালে রোগীর ব্যাপক উল্লম্ফন এবং ১০ লাখের বেশি মৃত্যু দেখা যেতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড অ্যাভালুয়েশন ইনস্টিটিউটের (আইএইচএমই) এক পূর্বানুমানে বলা হয়েছে।
তাদের পর্যালোচনা বলছে, আগামী বছরের এপ্রিলের ১ তারিখ নাগাদ চীনে কোভিড রোগীর সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছাবে, মৃত্যুও সে সময় ৩ লাখ ২২ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
ততদিনে চীনের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ ও সংক্রমিত হতে পারে, বলছেন আইএইচএমই-র পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে।
কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে করোনাভাইরাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি।
সর্বশেষ গত ৩ ডিসেম্বর চীন কোভিডে মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল। দেশটি এখন পর্যন্ত মহামারীতে ৫ হাজার ২৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তীব্র বিক্ষোভ ও জন অসন্তোষের মুখে ডিসেম্বরেই চীন বিশ্বের অন্যতম কঠোর কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, যে কারণে সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতিও দেখা যাচ্ছে। আগামী মাসে চান্দ্র নববর্ষের মধ্যেই ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে ব্যাপকভাবে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
“কেউ ভাবেনি তারা এতদিন শূন্য কোভিডে (নীতিতে) কঠোর থাকবে,” শুক্রবার আইএইচএমই-র পূর্বানুমান অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার দিন এমনটাই বলেছেন মুরে।
চীনের শূন্য কোভিড নীতি হয়তো ভাইরাসের আগের ধরনগুলোকে সীমানার বাইরে রাখতে কার্যকর ছিল, কিন্তু অতি সংক্রমণশীল ওমিক্রনের কারণে ওই নীতি বজায় রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল, বলেছেন তিনি।
সিয়াটলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এ স্বনির্ভর মডেলিং গ্রুপটি সাধারণত বিভিন্ন সরকার ও কোম্পানির তথ্যের উপর নির্ভর করে; তারা এবার হংকংয়ে সাম্প্রতিক ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করেছে।
“আদিতে উহানে প্রাদুর্ভাবের সময়ের পর থেকে চীন তাদের দেশে কোভিডে মৃত্যুর তথ্য খুব একটা দেয়নি। যে কারণে আমরা হংকংয়ের দিকে তাকিয়ে সংক্রমণ মৃত্যুর হার কেমন হতে পারে তার একটা ধারণা করার চেষ্টা করছি,” বলেছেন মুর।
পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে, আইএইচএমই চীন সরকারের কাছ থেকে টিকাদান হার সংক্রান্ত তথ্য নিয়েছে এবং সংক্রমণের হার বাড়লে বিভিন্ন প্রদেশে কেমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে সে সম্বন্ধে ধারণা নিয়েছে বলে জানিয়েছে।
অন্যান্য গবেষকদের অনুমান, তড়িঘড়ি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় চীনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত হতে পারে, সেক্ষেত্রে জানুয়ারিতেই সংক্রমিতের সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছাতে পারে; বেশি আক্রান্ত হতে পারে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর লোকজন।
চীনে কোভিড ঝুঁকিতে থাকা লোকজনের সংখ্যা ব্যাপক হওয়ায়, তুলনামূলক কম কার্যকর টিকা ব্যবহার, ৮০ বছর ও তদোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে টিকাদানের হার কম হওয়ায় অনেকে কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: