বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৩৬ জন সীমান্ত পার হয়ে আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে।
Published : 07 Nov 2023, 03:50 PM
নাগোরনো-কারাবাখের এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনীয়র অর্ধেকের বেশি অঞ্চলটি ছেড়ে প্রতিবেশী আর্মেনিয়ায় চলে গেছে। আজারবাইজান পার্বত্য ভুখণ্ডটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর চার দিনেরও কম সময়ের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।
অঞ্চলটি আনুষ্ঠানিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হলেও জাতিগত আর্মেনীয়রা তিন দশক ধরে এর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে মাত্র ২৪ ঘণ্টার এক অভিযানে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর নাগোরনো-কারাবাখে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের মধ্যে আর্মেনিয়া দক্ষিণ ককেশাসের এ অঞ্চলটি দখল করে নিয়েছিল। তখন কারাবাখের কয়েক লাখ আজেরি বাসিন্দা অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়েছিল।
আজারবাইজানের কর্তৃপক্ষ নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয়দের পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়ে তাদের সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু আতঙ্কিত আর্মেনীয়রা তা বিশ্বাস করেনি। তাদের আশঙ্কা, এখানে আজারবাইজানের অধীনে থেকে গেলে নিপীড়ন ও ‘জাতিগত নিধনের’ শিকার হবে তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নাগোরনো-কারাবাখ থেকে ৬৫ হাজার ৩৬ জন সীমান্ত পার হয়ে আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এদের অধিকাংশই ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ভ্রমণের পর আর্মেনিয়ায় পৌঁছান। গাড়ি, ট্রাক, বাস ও এমনকি ট্রাক্টরে যতটুকু সম্ভব মালামাল বোঝাই করে আর্মেনিয়ায় হাজির হয়েছেন তারা। এ পরিস্থিতিকে আর্মেনিয়ার ইতিহাসের অন্যতম ‘কালো অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির একজন যাজক; পালিয়ে আসা লোকজনকে আধ্যাত্মিক সমর্থন যোগাতে সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করেছেন তিনি।
সোভিয়েত আমলে সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আজারবাইজানের অধীনে নাগোরনো-কারাবাখ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করেছিল। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সময়টিতেই প্রথম কারাবাখ যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত চলা এ যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিহত এবং লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, এদের অর্ধেকেরও বেশি ছিল জাতিগত আজেরি।
২০২০ সালে আজারবাইজান পাল্টা আঘাত হেনে ৪৪ দিনের যুদ্ধে কারাবাখের অনেকটা এলাকা পুনরুদ্ধার করে। গত সপ্তাহের সামরিক অভিযানে যে জয় তারা পেয়েছে তার ভিত্তি ২০২০ সালের বিজয়ের মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছিল।সংবাদসূত্র: রয়টার্স
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)