গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে চীন খোলাখুলিভাবে জানিয়ে রেখেছে।
Published : 11 Apr 2023, 01:00 PM
চীনের তিন দিনব্যাপী যুদ্ধ মহড়া শেষ হওয়ার পরও তাদের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমানগুলো তাইওয়ানের আশপাশের জলসীমায় অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার এমনটি জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর বেইজিংয়ের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণের সমালোচনা করেছেন স্বাশাসিত দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।
সাই যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যাঞ্জেলেসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করে তাইপে ফেরার পর শনিবার থেকে মহাড়াটি শুরু করেছিল চীন।
সাইকে সফরের বা ম্যাকার্থির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমোদন না দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছিল। গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে চীন খোলাখুলিভাবে জানিয়ে রেখেছে। তাইওয়ানকে নিজেদের একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে বেইজিং।
তবে তাইওয়ানের সরকার জোরালোভাবে চীনের দাবির বিরোধিতা করে আসছে।
সোমবার রাতে চীন জানায়, তাদের তিন দিনব্যাপী সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। কিন্তু তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালের শেষ দিকেও চীনের নয়টি যুদ্ধজাহাজ ও জে-১৬ এবং এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমানসহ ২৬টি আকাশযান যুদ্ধ জন্য প্রস্তুত অবস্থায় তাদের দ্বীপের চারপাশে টহল দিচ্ছিল।
মন্ত্রণালয়টি জানায়, তাইওয়ানের বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ও প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
তাইওয়ান সরকার বারংবার চীনের এ মহড়ার নিন্দা জানালেও বলেছে, তারা উত্তেজনা বৃদ্ধিতে ইন্ধন দেওয়ার মতো কোনো কিছু করবে না।
সোমবার মধ্যরাতের কিছুক্ষণ আগে নিজের ফেইসবুক পেইজে সাই লিখেন, “(প্রেসিডেন্ট হিসেবে) আমি বিশ্বে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করি।”
তাই যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতিসহ বিদেশে তার সফর নতুন কিছু নয় এবং তাইওয়ানের জনগণ এটিই আশা করে।
“যাইহোক, চীন এটিকে সামরিক মহড়া শুরু করার জন্য ব্যবহার করে তাইওয়ান ও অঞ্চলটিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। এটি এ অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের জন্য দায়িত্বশীল আচরণ না,” বলেন তিনি।
মহড়ায় ডজন ডজন যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমান পাঠিয়ে চীন নির্ভুল আক্রমণ ও তাইওয়ানকে অবরোধ করার অনুশীলন করে
সোমবার এই অভিযানে দ্বীপটির চারপাশ দিয়ে চীনের ৯১টি সামরিক আকাশযান উড়ে গিয়েছে বলে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
তাইওয়ানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিএনএ জানিয়েছে, এটি একটি রেকর্ড। তবে দ্বীপটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
সোমবার মন্ত্রণালয়টি একটি মানচিত্র প্রকাশ করে দেখিয়েছে, স্বাভাবিক সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক জলসীমা হিসেবে কাজ করা মধ্যবর্তী লাইনের উত্তর ও মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে চীনের বিমানগুলো তা অতিক্রম করেছে।
তারা আরও দেখিয়েছে, খুব সম্ভবত চীনের শানডং বিমানবাহি রণতরী থেকে উড্ডয়ন করা রণতরীভিত্তিক ১৫টি জে-১৫ তাইওয়ানের পূর্ব দিক দিয়ে উড়ে গেছে। তাইওয়ান গত সপ্তাহ থেকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের এই বিমানবাহী রণতরীটির গমনপথের ওপর নজর রাখছে।
আরও খবর:
তাইওয়ানের আশপাশে মহড়া, চীনকে ‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের