ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হতে ‘আরও অনেক মাস’ লাগবে।
Published : 01 Jan 2024, 09:14 AM
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। গাজার শহরগুলো ও শরণার্থী শিবিরগুলোর ধ্বংস্তূপের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই হচ্ছে।
রোববার দিনভর ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক হামলার পর রাতে গাজা থেকে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে হামাসের যোদ্ধারা। হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেড বলেছে, গাজায় ‘বেসামরিকদের বিরুদ্ধে গণহত্যার’ প্রতিক্রিয়ায় এসব রকেট ছোড়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হতে ‘আরও অনেক মাস’ লাগবে।
তার এ বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় গাজার এক শতাংশ বাসিন্দা নিহত ও ভূখণ্ডটির অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও যুদ্ধ থামছে না। গাজার ওপর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহাল করার প্রত্যয় জানিয়েছে নেতানিয়াহু। এতে করে ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্রীক সমাধানের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, জানিয়েছে রয়টার্স।
২০২৩: মানবিক সংকট আরও গভীর হওয়ার বছর
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকা
গাজা থেকে কিছু রিজার্ভ সেনাকে সরিয়ে নেবে ইসরায়েল। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতির মধ্যে এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের অর্থনীতিকে সহায়তা করবে বলে দাবি করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
গাজার বাসিন্দারা ও চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, রোববার ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো ভূখণ্ডটির মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এখানকার আল-মাঘাজি ও আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে এক বাড়িতেই ১০ জন নিহত হয়।
ধ্বংস্তূপের পরিণত হওয়া গাজার বিভিন্ন শহরে ঢুকে পড়া ইসরায়েলি ট্যাংকগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করছে হামাস যোদ্ধারা। এসব এলাকা থেকে বহু লোক রাফার দিকে পালিয়ে গেছে।
রোববার প্রকাশিত রেড ক্রিসেন্টের এক ভিডিওতে দেখা গেছে, গাজার মধ্যাঞ্চলে অন্ধকার ও ধ্বংসস্তূপের ধোঁয়া-ধূলার মধ্যে আহত একটি শিশুকে বহন করে নিয়ে আসতে কাজ করছেন উদ্ধারকারীরা। গাজা সিটির নিকটবর্তী আল-মুঘরাকা গ্রামে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। খান ইউনিস শহরে আরেক হামলায় আরেকজন নিহত ও বেশ কয়েজন আহত হয়।
গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে রাফায় পালিয়ে যাওয়া জয়নাব খলিল (৫৭) রোববার রাতে বলেন, “আজ রাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আকাশ আতশবাজির আলোয় আলোকিত হবে আর বাতাস আনন্দ উল্লাস, হাসিতে ভরে উঠবে। গাজায় আমাদের আকাশ ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাংকের গোলায় ভরে উঠেছে, সেগুলো নিরপরাধ, বাস্তুচ্যুত বেসামরিকদের ওপর পড়ছে।”
১২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২১৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। ইতোমধ্যে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন।
২০২৩ সাল শেষ হয়েছে। নতুন বছরকে সামনে রেখে গাজার ফিলিস্তিনিরা একটি যুদ্ধবিরতির প্রার্থনা করেছিলেন, কিন্তু ২০২৪ ভালো হবে এমন আশা খুব ক্ষীণ।