‘জঘন্য, ভয়ঙ্কর’ কাহিনিগুলো প্রাসাদ থেকেই ছড়িয়েছে: প্রিন্স হ্যারি

রাজপরিবারের সদস্যরা তাদের নিজেদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটাতে তার ও তার স্ত্রীর নামে ‘কুৎসিত’ কাহিনি ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রিন্স হ্যারি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2023, 09:02 AM
Updated : 9 Jan 2023, 09:02 AM

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা ট্যাবলয়েড পত্রিকার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে নেতিবাচক পরিণতি ডেকে এনেছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রিন্স হ্যারি।

রাজপরিবারের সদস্যরা তাদের নিজেদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটাতে তার ও তার স্ত্রী মেগানের নামে ‘কুৎসিত’ কাহিনি ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হ্যারি।

রাজতন্ত্রকে সাহায্য ও গণমাধ্যমকে পরিবর্তন করার চেষ্টায় তিনি তার সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দ্বন্দ্বের কথা সংবাদপত্রে প্রকাশ করেছিলেন বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কনিষ্ঠ পুত্র।

হ্যারি জানান, তার গণমাধ্যমের পরিবর্তনের চেষ্টাকে বাবা চার্লস ‘আত্মহত্যার মিশন’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।

সোমবার প্রকাশিত হতে যাচ্ছে হ্যারির স্মৃতিকথামূলক বই ‘স্পেয়ার’, তার আগে রোববার গণমাধ্যমে দেওয়া দুটি বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ডিউক অব সাসেক্স।

ব্রিটিশ আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ২০২০ সালে তিনি ‘নিজেদের জীবন নিয়ে শঙ্কা থেকে’ তার পরিবার নিয়ে ব্রিটেন ছেড়ে পালিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “অনেক বছর ধরে আমার ও আমার পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা বলার পর পরিবারটির কিছু নির্দিষ্ট সদস্যের সঙ্গে ট্যাবলয়েডগুলোর সম্পর্ক আবার শুরু হয়, এই সদস্যরা তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে এই অসৎ সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে আমার, আমার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করা শুরু হয়, তখন আমি সীমারেখা টেনে দেই।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ভুলবশত অনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হওয়ার পাঁচ দিন আগেই বৃহস্পতিবার হ্যারির বই ‘স্পেয়ার’ স্পেনে বিক্রি করা শুরু হয়ে যায়, এতে হ্যারি কীভাবে তার কৌমার্য হারান এবং অবৈধ মাদক গ্রহণ করেন সেসবসহ তার বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি পারিবারিক অসঙ্গতির আরও অন্তরঙ্গ ছবিও প্রকাশ পেয়েছে।

এক ঝগড়ার সময় তার বড় ভাই ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম তাকে আঘাত করেন আর তারা দুই ভাইই দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যামেলিয়াকে বিয়ে না করতে তাদের বাবা চার্লসের কাছে কাকুতিমিনতি করেছিলেন বলে বইটি জানিয়েছে।   

সিবিএস চ্যানেলের ‘সিক্সটি মিনিটিস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি জানান, তিনি তার ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে কিছু সময় কথা বলেননি। এই ডিউক অব সাসেক্স জানান, তিনি তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে ‘এখনও’ কথা বলেন না তবে ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় আছেন’।

হ্যারি জানান, তিনি তার বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও ‘দীর্ঘদিন’ কথা বলেননি।  

তাদের পরিবারের আবার পুনর্মিলনের সম্ভাবনা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে হ্যারি বলেন, “বল এখন অনেকটাই তাদের কোর্টে আছে।”

প্রিন্স হ্যারির প্রকাশিতব্য স্মৃতিকথার বিয়ষবস্তু নিয়ে বাকিংহাম প্রাসাদের মন্তব্য জানাতে চাওয়া হলেও তারা বারবার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে সিএনএন জানিয়েছে।  

ভাষ্যকাররা বলেছেন, চার্লসের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়নার (উইলিয়াম ও হ্যারির মা) সম্পর্কের ভাঙনকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ দশকের টেলিভিশন সিরিজের সময় ব্রিটিশ রাজতন্ত্র যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল তারপর থেকে হ্যারির বই তাদের সবচেয়ে বড় সংকটে ফেলেছে।

রানি এলিজাবেথের মৃত্যু ও চার্লস সিংহাসনে বসার মাত্র চার মাসের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটছে।

রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান যেসব অভিযোগ করেছিলেন আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হ্যারি সেগুলোরই আরও বিস্তারিত পুনরাবৃত্তি করেছেন।

তিনি বলেছেন, রাজপরিবারের সদস্যরা ও তাদের সহযোগীরা শত্রুভাবাপন্ন ও কখনও কখনও বর্ণবাদী ব্রিটিশ সংবাদপত্র থেকে তাদের রক্ষা করতে শুধু ব্যর্থ হয়নি, অজ্ঞাত উৎসের মাধ্যমে তাদের নিয়ে কাহিনিও ফাঁস করেছে।