ওয়াশিংটনকে রাশিয়ার আকাশসীমা থেকে দূরে থাকতে মস্কোর হুঁশিয়ারি

বিশাল আকারের চালকবিহীন বিমান এমকিউ ৯ রিপার ড্রোন আকাশে অনেক উঁচু থেকে নজরদারির কাজ করতে সক্ষম।

রয়টার্স
Published : 15 March 2023, 02:39 PM
Updated : 15 March 2023, 02:39 PM

কৃষ্ণ সাগরের আকাশে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনের সঙ্গে রাশিয়ার জঙ্গি বিমানের সংঘর্ষের পর ওয়াশিংটনকে নিজেদের আকাশসীমা থেকে দূরে থাকতে বলেছে মস্কো।

ইউক্রেইনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম মুখোমুখি কোনো সংঘাতে জড়িয়েছে বিশ্বের দুই পরাশক্তি।

মঙ্গলবার কৃষ্ণ সাগরের আকাশে যুক্তরাষ্ট্রের একটি এমকিউ ৯ রিপার ড্রোনের সঙ্গে রাশিয়ার এসইউ ২৭ যুদ্ধবিমানের সংঘর্ষে মার্কিন ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বলছে, ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিয়মিত মিশনে ছিল। রুশ জঙ্গি বিমান সেটিকে আটকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে সেটিতে আঘাত করে। রাশিয়ার অপেশাদার, বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ফলেই এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

মস্কো অবশ্য তাদের যুদ্ধ বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হওয়ার দাবি অস্বীকার করেছে। বুধবার মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়, সেটি আকাশে বেশ কয়েকবার ‘তীক্ষ্ণ মোড়’ নেওয়ার পর বিধ্বস্ত হয়।

‘‘ড্রোনটি সেটির রেডিও (ট্রান্সপন্ডার) সিগন্যাল ব্যবস্থা বন্ধ করে আমাদের আকাশসীমার কাছে উড়ছিল। সেটি কোথা থেকে এসেছে তা শনাক্ত করতে আমরা যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছি।”

মস্কোর পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়ার আগে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস থেকে তাদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

সেখানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনটি ইচ্ছা করে উস্কানিমূলকভাবে রাশিয়ার আকাশসীমায় উড়ানো হয়েছিল।”

‘‘আমাদের আকাশসীমার খুব কাছে এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অগ্রহণযোগ্য কার্যকলাপ নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগের কারণ। তারা গোয়েন্দাতথ্য সংগ্রহ করছে। যাতে পরবর্তীতে কিইভ সরকার আমাদের ভূখণ্ডে এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর উপর আক্রমণের জন্য তা ব্যবহার করতে পারে।”

রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ শুধু নিজের উদ্বেগের কথাই বলেননি। বরং একই কাজ যদি রাশিয়া করত, তবে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে তার জবাব দিতো তা নিয়েও প্রশ্ন ছুড়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘আসুন আমরা বরং একটি পাল্টা প্রশ্ন করি: যদি, উদাহরণ হিসেবে বলছি, রাশিয়ার একটি সামরিক ড্রোন নিউ ইয়র্ক বা সান ফ্রানসিককোর আকাশসীমার কাছে দেখা যেত তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী বা নৌবাহিনী কিভাবে তার জবাব দিত?

‘‘আমি তাই ওয়াশিংটনকে বলছি, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে ‍নাটক করা বন্ধ করুন।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত নজরদারি বিমান ওড়ায়।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু পর যুক্তরাষ্ট্র কিইভকে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু ওয়াশিংটন থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তাদের সেনাবাহিনী সরাসরি ওই যুদ্ধে অংশ নেবে না।

ওয়াশিংটনে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউট এর একজন সিনিয়র ফেলো এলিজাবেথ ব্র বলেন, ‘‘এই যুদ্ধে এটা খুবই সংবেদনশীল একটি পর্যায়। কারণ, এটাই সবার চোখের সামনে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার প্রথম মুখোমুখি সংঘাত।”

Also Read: কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোনের ঘটনা নিয়ে যা জানা গেছে

Also Read: কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোনের সঙ্গে রুশ জঙ্গি বিমানের সংঘর্ষ