পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণ করতে যাচেছ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে।
Published : 23 Aug 2023, 12:26 PM
চাঁদের যে অংশ নিয়ে মানুষের জানার অনেক বাকি, ছায়া বা অন্ধকারে ঢাকা যে অংশ বিজ্ঞানীদের তেমন ধারণা নেই, সেই দক্ষিণ মেরুতেই পদচিহ্ন ফেলে ইতিহাস গড়তে চলেছে ভারত।
সবকিছু ঠিক থাকলে ভারতের স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের ওই অংশে অবতরণ করবে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম।
এদিকে বিজ্ঞানের জয়যাত্রার ইতিহাসের সাক্ষী হতে এই অভিযান সফলের জন্য পূজা-প্রার্থনা চলছে ভারতের বিভিন্ন স্থানে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, চাঁদের মাটি স্পর্শের আগের ২০ মিনিটকে ‘ভয়ঙ্কর’ হিসেবে অভিহিত করছেন বিজ্ঞানীরা। বিক্রমের অবতরণের সেই মুহূর্ত স্থানীয় সময় ৫টা ২৭ মিনিট থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ইসরোর ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে এর সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এই ইতিহাসের সাক্ষী হতে ভারতের স্কুল ও ক্যাম্পাসগুলো খোলা থাকবে। ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকায় সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন।
এর আগে ২০১৯ সালে চাঁদের একই এলাকায় নিরাপদে নামতে ব্যর্থ হয়েছিল চন্দ্রযান-২। চাঁদের ওই অংশটি গভীর খানাখন্দে ভরা।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো প্রধান শ্রীধরা পানিকার সোমনাথ বুধবার জানিয়েছেন, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ীই হচ্ছে। চাঁদের মাটিতে নামার গোটা পক্রিয়ায় ল্যান্ডারের ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে। সিস্টেম নিয়মিত চেক করা হচ্ছে।
চন্দ্রযান-২ এর ব্যর্থ অভিযানের পর এই অভিযান এবার প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি। কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে বলে আশা করছেন তারা।
চাঁদের মাটিতে নামার পর ল্যান্ডার বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। তার ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাবে বিক্রম।
রোবটযান প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ এবং পানির সন্ধান করবে। এই মিশনের আয়ু হবে এক চন্দ্র দিবস, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
বিক্রম যদি ঠিকঠাক অবতরণ করতে পারে তবে ভারতই হবে চাঁদের রহস্যঘেরা দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানো প্রথম এবং চাঁদের বুকে সফলভাবে নামতে পারা চতুর্থ দেশ। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে মানুষের গবেষণা খুব বেশি এগোয়নি। ছায়ায় ঢাকা ওই অঞ্চল চাঁদের উত্তর মেরুর চেয়ে অনেকটা বড়। ধারণা করা হয়, সবসময় অন্ধকারে থাকা ওই অঞ্চলে বরফ বা পানির অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে। এই বরফ বা পানি খোঁজাই ভারতের এবারের চন্দ্রাভিযানের মূললক্ষ্য।
গত ১৪ জুলাই দুপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে ভারতের শতকোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশন আর সোশাল মিডিয়ায়। আগ্রহ নিয়ে নজর রাখেন বিশ্বের অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরাও।