যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে না চাইলেও তাদের বাহিনীগুলো ও ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে ‘দ্বিধা করবে না’।
Published : 14 Apr 2024, 06:53 PM
ইসরায়েলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর প্রতিশোধমূলক কোনো পাল্টা হামলা হলে ‘আরও বড় জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
রোববার ইরান এই বলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে। আর ইসরায়েল বলেছে, “অভিযান এখনও শেয় হয়নি।”
ওয়াশিংটন বলেছে, ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু তাদের বাহিনীগুলো ও ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে দ্বিধা করবে না।
গাজা যুদ্ধের কারণে কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের আঞ্চলিক মিত্রদের সংঘাত চলছে। এর মধ্যেই ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ইরানি কনস্যুলেটে সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের শীর্ষ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান।
তবে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে চালানো এই হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। কারণে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জর্ডানের সহায়তায় গুলি করে ধ্বংস করা হয়েছে।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও সেটি স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ৭ বছর বয়সী এই ইসরায়েলি শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়া গুরুতর ক্ষয়ক্ষতির আর কোনো খবর হয়নি বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
ইরানি হামলার জবাব কী হতে পারে তা নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার পরিকল্পিত বৈঠকের আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, “আমরা বাধা দিয়েছি, প্রতিহত করেছি, একসঙ্গে আমরা জিতব।”
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেছেন, হামলা ব্যর্থ করা হলেও সামরিক অভিযান এখনও শেষ হয়নি আর ‘আমাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে’।
ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভ টেলিভিশন অনামা এক ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ইরানি হামলায় ‘উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া’ দেখানো হবে।
বিশ্ব শক্তি রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্স এবং মিশর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব দেশগুলো সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের কূটনৈতিক মিশন বলেছে, তাদের পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল ‘ইসরায়েলের অপরাধের’ শাস্তি দেওয়া, কিন্তু এখন তারা ‘বিষয়টি শেষ হয়েছে বলে মনে করেন’।
ইরানের সেনা প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি বলেছেন, “ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় তাহলে আমাদের জবাব আজ রাতের সামরিক পদক্ষেপের চেয়ে অনেক বড় হবে।”
প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করলে তাদের ঘাঁটিগুলোও হামলার শিকার হতে পারে বলে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছেন তিনি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সামরিক পদক্ষেপকে ‘নির্লজ্জ হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই হামলার বিষয়ে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করতে রোববার তিনি শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর গোষ্ঠী জি-৭ এর নেতাদের বৈঠক আহ্বান করবেন বলে বাইডেন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, আমেরিকা ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না কিন্তু মার্কিন বাহিনীগুলোকে সুরক্ষা দিতে ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করতে দ্বিধা করবে না।
ইরানের হামলার নিন্দা জানানোর জন্য ও দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার জন্য জাতিংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় রোববার বিকাল ৪টায় একটি বৈঠকের সূচি স্থির করেছে।
আরও পড়ুন: