ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও বিদ্যুতের তীব্র চাহিদা যদি বৈদ্যুতিক গ্রিডের ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করে তাহলে ফ্রান্স চলতি শীতেই একের পর এক লোডশেডিংয়ের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির জ্বালানি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান আরটিই-র প্রধান জাভিয়ে পিশাকজেগ।
ফ্রান্স ইনফো রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার তিনি এ সতর্কবার্তা দেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।
জাভিয়ের আশঙ্কা, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ করে রাখা পারমাণবিক চুল্লিগুলো পুনরায় চালু করতে ফ্রান্স হিমশিম খাওয়ায় আগামী মাসে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব নাও হতে পারে।
ফ্রান্স তার বিদ্যুতের প্রায় ৭০ শতাংশ ৫৬ চুল্লির একটি পারমাণবিক বহরথেকে উৎপাদন করলেও সেসব চুল্লির ২২টিই এখন বন্ধ।
রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমে আসায় এমনিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো চাপে আছে; তার সঙ্গে চুল্লি বন্ধ থাকা ফ্রান্সের পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।
ফ্রান্স ইউরোপের অন্য অনেক দেশের তুলনায় রাশিয়ার গ্যাসের ওপর কম নির্ভরশীল হলেও স্বাভাবিক সময়ে তারা পারমাণবিক খাত থেকে অভ্যন্তরীণভাবে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পেত, এবার তার ঘাটতি দেখা যাওয়ায় দেশটিকে এখন বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
ফরাসী সরকার এরই মধ্যে বিকল্প পরিকল্পনাও প্রস্তুত করেছে এবং সম্ভাব্য লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ বিতরণের ক্ষেত্রে কাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সে বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনাও দিয়েছে।
কর্মকর্তারা যদিও লোডশেডিং পুরো দেশে নয়, গ্রিডের আওতাধীন সামান্য অংশে হবে বলে লোকজনকে আশ্বস্ত করছেন; তারপরও ঘরবাড়ি গরম রাখার চাহিদা যখন চূড়ায় থাকবে, তখন লাখ লাখ লোককে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে হতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
“নির্ধারিত কোনো লোডশেডিং-ই একইসময়ে ৪ লাখের বেশি মানুষকে দুর্ভোগে ফেলবে না,” ফ্রান্সের সরকারের দেওয়া নির্দেশনায় এমনটাই বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নির্দেশনার ওই নথিতে আরও বলা হয়েছে, লোডশেডিং হলে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার পিক আওয়ারে হতে পারবে, এবং কোনো ক্রমেই দুই ঘণ্টার বেশি হতে পারবে না।
বিদ্যুতের ঘাটতি কিছু পরিষেবার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে; অপর্যাপ্ত সরবরাহের দিনগুলোতে স্কুল বন্ধ এবং ট্রেন চলাচল বাতিল হতে পারে বলে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ সতর্কও করেছে।