ভিসার তথ্য গোপনীয়। সে কারণে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেই ব্যক্তির নাম নির্দিষ্ট করে প্রকাশ করা হয়নি,” বলেন তিনি।
Published : 14 Jan 2024, 10:11 AM
গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বাধা হলে আগামীতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে বলে যে মন্তব্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস করেছিলেন, সে প্রসঙ্গ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়েও।
ভবিষ্যতে তেমন কিছু হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তবে গত শুক্রবার যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা এসেছে, তাদের মধ্যে যে গণমাধ্যমকর্মী নেই, সেটা তার কথায় স্পষ্ট।
গত মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তখনই জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী’ ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, তার দেশ সেই ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়। এসব ব্যক্তির পাশাপাশি তাদের পরিবারের নিকটতম সদস্যরাও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হতে পারেন।
তবে, কতজন ব্যক্তি বা কাদের বিষয়ে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত রোববার চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আগামীতে’ গণমাধ্যমও ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।
রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক একজন সম্পাদক, পশ্চিমা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করার অভিজ্ঞতা যার আছে, তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ হবে মুক্ত সংবাদমাধ্যম নীতির পরিপন্থি। যদি সত্যিই সংবাদকর্মীদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়,তা কি মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করবে না?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ভিসার তথ্য গোপনীয়। সে কারণে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেই ব্যক্তির নাম নির্দিষ্ট করে প্রকাশ করা হয়নি।
“তবে এটা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর সেটা কার্যকর করা হবে।”
এই ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে যে প্রতিক্রিয়া এসেছে, সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক।
ম্যাথিউ মিলার উত্তরে বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যখন গত মে মাসে এই নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করলেন,তখনই আমরা বলেছি, নির্বাচন সামনে রেখে কোনো একটি পক্ষ নেওয়া এই ভিসা নীতির উদ্দেশ্য নয়, বরং বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সমর্থন দেওয়াই এর উদ্দেশ্য। গত শুক্রবার যখন আমরা বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দিলাম, তখনও আমরা জানিয়েছি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের কর্মীরা এর আওতায় পড়বে।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে তার দল ৪৮ ঘণ্টার যে সময় বেঁধে দিয়েছে, সে বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় ব্রিফিংয়ে। জানতে চাওয়া হয়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী হবে।
জবাবে মিলার বলেন, এ নিয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)