কয়েকদিনের তীব্র লড়াইয়ের পর আল-শিফা হাসপাতাল এখন ইসরায়েলি বাহিনীর দখলে।
Published : 20 Nov 2023, 11:38 PM
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতাল থেকে উদ্ধার ২৮টি ‘প্রিম্যাচিউর’ নবজাতককে চিকিৎসার জন্য সোমবার মিশরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসি অ্যারাবিকের প্রতিনিধি ইয়াসমিন শাহিন জানান, শিশুগুলোর মধ্যে যাদের অবস্থা খানিকটা ভালো তাদের আল-আরিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গাজা সীমান্ত থেকে আল-আরিশের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটারের মত। আর যে শিশুদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের চিকিৎসার জন্য আকাশ পথে কায়রো নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ওই নবজাতকদের রোববার আল-শিফা হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। যাতে সোমবার মিশর যাত্রার আগে তাদের অবস্থা খানিকটা স্থিতিশীল করে নেওয়া যায়।
গত বুধবার থেকে গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় আল-শিফার এনআইসিইউতে প্রায় ৩৯টি ‘প্রিম্যাচিউর’ নবজাতকের ইউকিউবেটরে চিকিৎসা চলছিল। এনআইসিইউ অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় কয়েকদিন তাদের ইউকিউবেটর থেকে বাইরে রাখা হয়। যে কারণে কয়েকটি নবজাতক মারাও গেছে।
নবজাতক শিশুগুলোর সঙ্গে তাদের পরিবারের পাঁচজন সদস্যও মিশর গেছেন। সেখানে কয়েকটি শিশু এতিম বলেও জানান বিবিসি প্রতিবেদক।
এই শিশুদের একজনের মা লবনা আল-সাইক। যিনি তার সন্তানের সঙ্গে মিশর গেছেন। এজন্য গাজায় তাকে তার আরো তিনটি সন্তানকে ছেড়ে যেতে হয়েছে।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমি এমনকি যাওয়ার আগে তাদের একবার জড়িয়ে ধরার সুযোগও পাইনি। আমি আমার মেয়েকে এ অবস্থায় ছেড়ে যেতে পারি না। আমি তাদের বিদায় জানাতে পারিনি।
“আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে হাসপাতালে হামলা হতে পারে। এবং শিশুগুলো যে অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে তাদের সে অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।”
বিশ্বকে তার একটা কথাই বলার আছে বলে জানান এই মা। বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। এরা সব নিষ্পাপ শিশু।”
কয়েকদিনের তীব্র লড়াইয়ের পর আল-শিফা হাসপাতাল এখন ইসরায়েলি বাহিনীর দখলে। ইসরায়েলের দাবি, হামাস যোদ্ধারা হাসপাতালটিকে সামরিক কাজে ব্যবহার করেছে এবং হাসপাতালের নিচে ভূগর্ভে এবং আশেপাশে হামাসের কমান্ড সেন্টার রয়েছে। যদিও হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বার বার তাদের সেই দাবি অস্বীকার করেছে।
আল-শিফা দখলের পর ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সেখানে হামাসের টানেলের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছে। এমনকি দাবি করেছে, জিম্মিদের আটকে রাখার জন্য হামাস হাসপাতালটি ব্যবহার করেছে।