রোববার দেশটিতে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত ৪০ হাজার ৫২ জন করোনাভাইরাসবাহী শনাক্ত হয়েছে।
Published : 28 Nov 2022, 01:35 PM
চীনে সরকারের কঠোর কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলার মধ্যেই টানা পঞ্চম দিনের মতো রেকর্ড কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, আগেরদিন রোববার দেশটিতে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত ৪০ হাজার ৫২ জন করোনাভাইরাসবাহী শনাক্ত হয়েছে।
আগের দিন শনিবার ৩৯ হাজার ৫০৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তার আগের দিন শুক্রবার ৩৫ হাজার ১৮৩ জনের দেহে অত্যন্ত সংক্রামক এ ভাইরাসটি শনাক্ত হয়।
মেগাসিটি গুয়াংজু এবং দক্ষিণপশ্চিমের চংশিং শহরে হাজার হাজার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এসব মহানগরী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এর পাশাপাশি রোববার চীনের আরও অনেকগুলো শহরে শত শত মানুষের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়।
এদিন দেশটির বৃহত্তম শহর সাংহাই, রাজধানী বেইজিং, প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছিল যেই শহরে সেই উহান ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লানচোতে সরকারের কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। নানজিং, ছাংদু ও উহানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
রোববার রাতে সাংহাইয়ে শত শত বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এখানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটক করে বাসভর্তি করে নিয়ে গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, এ সময় সাংহাইয়ে পুলিশ বিবিসির একজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার পর আটক করে, বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়।
সাংহাইয়ের বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল উলুমুকি মিডল রোডে সোমবার পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে, তারা এখানে রাস্তায় নীল রঙয়ের দীর্ঘ ব্যারিকেডও বসিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। এদিন এখান থেকে পুলিশ অন্তত দুই জনকে আটক করেছে।
রোববার মধ্যরাত পার হওয়ার পর বেইজিংয়ে তৃতীয় রিং রোডে বড় ধরনের একটি জমায়েত হয়, তবে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে।
সোমবারের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় এদের একটি দল কাগজের সাদা পৃষ্ঠা হাতে ‘আমরা কোভিড পরীক্ষা চাই না, আমরা স্বাধীনতা চাই’ শ্লোগান দেয়। চীনের সাম্প্রতিক বিক্ষোভের প্রতীক হয়ে উঠেছে কাগজের সাদা পৃষ্ঠা।
বিক্ষোভরতদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িগুলোর চালকরা হর্ন বাজিয়ে ও বুড়ো আঙ্গুল তুলে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছিল, বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক হর্ষধ্বনি করে তাদের স্বাগত জানাচ্ছিল।
উর্দি পরা কয়েক ডজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদের অনুসরণ করছিল আর পুলিশের গাড়িগুলো পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছিল। সাদা পোশাকের নিরাপত্তা সদস্যরা বিক্ষোভরত জনতার সঙ্গে মিশে ছিল বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
চীনের সরকার এসব বিক্ষোভের কথা স্বীকার করেনি এবং দাপ্তরিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়াও জানায়নি।
ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সত্ত্বেও চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিক্ষোভের খবর দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
সরকার বিরোধী বিরল এই বিক্ষোভে চীনের জিরো-কোভিড নীতি ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগে দেখা দিয়েছে। এর জেরে সোমবার স্টক এক্সচেঞ্জে দরপতন হয়েছে এবং তেলের দাম কমে গেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতিতে এর প্রভাবও পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চীনের কর্তৃপক্ষ অনলাইন থেকে বিক্ষোভ সম্পর্কিত ছবি ও পোস্ট সরানো শুরু করেছে।
এক দশক আগে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে চীনে এ ধরনের বিক্ষোভ নজিরবিহীন।
Students from the elite school Tsinghua University protested with Friedmann equation. I have no idea what this equation means, but it does not matter.
— Nathan Law 羅冠聰 (@nathanlawkc) November 27, 2022
It's the pronunciation: it's similar to "free的man" (free man)—a spectacular and creative way to express, with intelligence. pic.twitter.com/m5zomeTRPF
আরও পড়ুন:
চীনের সাংহাইয়ে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ