আপাতত ৩৪ হাজার ৪০০ বর্গফুটের এক গুদামে রাখা হয়েছে ২৫ হাজার ছবি ও ভাস্কর্যের ওই বিপুল সংগ্রহ। ওই গুদামের ভাড়াই বছরে আট লাখ ইউরো।
Published : 20 Oct 2023, 02:07 PM
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনি রেখে গেছেন ব্যবসার বিশাল সাম্রাজ্য, আর চিত্রকর্মের বিপুল সম্ভার; কিন্তু সেটাই এখন সন্তানদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেশটির শীর্ষস্থানীয় চিত্র সমালোচক ভিত্তোরিও স্গারবির ভাষায়, বেরলুসকোনির সংগ্রহের ওই ২৫ হাজার চিত্রকর্ম ও শিল্পকর্মের বেশিরভাগই রদ্দি, দুর্বল কাজ, যেগুলোর মূল্য খুব সামান্যই।
গত জুনে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেরলুসকোনির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭৬০ কোটি ডলার। তার পাঁচ সন্তান সেই সম্পদের উত্তরাধিকারী।
নানা কারণে বিতর্কিত এই ধনকুবের ফুটবলের পাশাপাশি আগ্রহী ছিলেন চিত্রকর্ম নিয়ে। তবে তার সংগ্রহের ছবি আর ভাস্কর্যের একটি বড় অংশ টেলিভিশনের নিলাম অনুষ্ঠান থেকে কেনা।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, এই বিপুল সংখ্যক শিল্পকর্ম এখন উত্তরাধিকারীদের জন্য পাহাড়সম বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপাতত মিলানে তার ম্যানশনের কাছে ৩৪ হাজার ৪০০ বর্গফুটের এক গুদামে রাখা হয়েছে ছবি আর ভাস্কর্যগুলো। ওই গুদামের ভাড়াই বছরে আট লাখ ইউরো।
অনেক ছবি আর ফ্রেম ইতোমধ্যে পোকায় ধরেছে। সেই পোকা ছাড়াতে যে খরচ হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেটা ওই ছবির দামের চেয়ে বেশি।
বেরলুসকোনির সংগ্রহশালায় আছে ম্যাডোনা, নগ্ন নারীদের প্রচুর ছবি, প্যারিস, নেপলস আর ভেনিসের সিটিস্কেপ। তবে এসব ছবি চিত্র সমালোচক ভিত্তোরিও স্গারবিকে মোটেও আগ্রহী করতে পারেনি।
তার ভাষায়, ওই ২৫ হাজার শিল্পকর্মের মধ্যে সত্যিকারের শিল্পমূল্য আছে বড় জোর ছয় কি সাতটির। এসব ছবি যদি কোনও মিউজিয়ামে রাখা হয়, তাহলে সেসব দেখে কেবল তারাই আনন্দ পাবেন, যাদের আর্ট নিয়ে তেমন জানাশোনা নেই।
বিবিসি লিখেছে, বেরলুসকোনির পুরো সংগ্রহের দাম হতে পারে ২ কোটি ইউরো, অর্থাৎ, প্রতিটি ছবির দাম গড়ে ৮০০ ইউরো।
অবশ্য দামি কিছু ছবিও বেরলুসকোনি রেখে গেছেন। রেনেসাঁ যুগের শিল্পী টাইটান, ডাচ গ্র্যান্ড মাস্টার রেমব্রান্টের আঁকা সেসব ছবি সাজানো রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ম্যানশনে।
লন্ডনভিত্তিক আর্ট ডিলার সিজার ল্যামপ্রন্তি প্রায় তিন দশক বেরলুসকোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে গেছেন। বিবিসি-কে তিনি বলেছেন, ইতালীয় এই বিলিয়নেয়ার ছিলেন একজন হুজুগে ক্রেতা।
“উনি সেইসব নারীদের পোর্ট্রেট কিনতে ভালোবাসতেন, যেসব ছবি তিনি উপহার হিসেবে বন্ধুদের দিয়েছিলেন।
“যখন তরুণ ছিলেন, তখন গ্যালারি বা ডিলারদের কাছ থেকে ছবি কিনতেন। তবে পরে বেশি বয়সে গিয়ে কিনতেন মূলত টেলিভিশনে প্রচারিত নিলাম থেকে। এসব ছবি যে আসলে মূল্যহীন, সেটা তিনি জানতেন।”