পিরিয়ডের রক্তপাত নিয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই।
Published : 26 Jan 2024, 04:59 PM
বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৮০ কোটি নারীর মাসিক চলতে থাকে। তারপরও মাসিকের রক্ত নিয়ে ধারণা খুব সামান্য। ব্রিটিশ চিকিৎসক সারা নাসেরি তার স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ কিউভিন দিয়ে এই অচলায়তন ভাঙতে চান।
তিনি মনে করেন, মাসিকের রক্ত পরীক্ষা করে দেখলে একজন নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে আরও বিষদ জানা যেতে পারে।
তবে এই পরীক্ষার প্রক্রিয়া প্রস্তুত করা সহজ ছিল না। কারণ পিরিয়ডের রক্তপাত নিয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই।
খোঁজ করতে গিয়ে ২০১২ সালের একটি গবেষণা হাতে আসে সারা নাসেরির। সেখানে দেখা যায়, মাসিকের রক্ত পরীক্ষা করে ৩৮৫টি প্রোটিনের উপস্থিতি মিলেছে।
সাদাস্রাব, জরায়ুর শ্লেষ্মা এবং এন্ডোমেট্রিয়াল কোষও থাকে মাসিকের রক্তে। এন্ডোমেট্রিয়াম হলো জরায়ুর ভেতরের একটি ঝিল্লি বা স্তর। প্রতি মাসে এই এন্ডোমেট্রিয়াম স্তরটি পুরু হয় সন্তান ধারণের উপযোগিতা তৈরিতে। গর্ভধারণ না হলে এই স্তর খসে যায়।
নাসেরি বলেন, ”রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়। আমি তাই ভেবে দেখলাম, নারীর তো প্রতি মাসে রক্তপাত হয়। তাহলে কেন এই রক্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কেউ ব্যবহার করছে না?”
কিউভিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় মাসিকের রক্ত থেকে শর্করা ও কোলেস্টরেলের পরিমাণ জানা সম্ভব।
মাসিকের রক্ত সংগ্রহে বিশেষ ধরনের প্যাড বানিয়েছে কিউভিন, যা এখন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে যাচাই হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে মেডিকেল গবেষণায় যে অর্থায়ন হয়, তার মাত্র দুই দশমিক এক শতাংশ পায় প্রজনন স্বাস্থ্য। অথচ অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ নারী প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে ভুক্তভোগী।
নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নর্থওয়েল হেলথের ফেইনস্টেইন ইনস্টিটিউস ফর মেডিকেল রিসার্চের এন্ডোমেট্রিওসিস গবেষক ও অধ্যাপক ক্রিসটিন মেজ মনে করেন, মাসিকের রক্তকে নোংরা মনে করেন অনেকে। পিরিয়ডের রক্ত নিয়ে সীমিত পরিসরে গবেষণা হওয়ার এটি একটি বড় কারণ।
“আমরা যখন মাসিকের রক্ত সংগ্রহ করব বলে ঠিক করলাম, অনেক চিকিৎসক জানালেন তারা রোগীকে এই বিষয়ে বলতে পারবেন না।
”তবে আমরা পরে সোশাল মিডিয়ায় আহ্বান জানালাম। ছয় হাজার নারী নিবন্ধন করে সাড়া দিলেন। তারা আসলে ওই গা ঘিন ঘিন ব্যাপারটার ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছেন।”
সংবাদসূত্র: বিবিসি
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)