দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সামরিকীকরণ চাইছে পশ্চিমারা: ল্যাভরভ

নম পেনে আসিয়ানের সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনাও করেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2022, 10:49 AM
Updated : 13 Nov 2022, 10:49 AM

রাশিয়া ও চীনের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পশ্চিমা দেশগুলো দক্ষিণপূর্ব এশিয়াকে সামরিকীকরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

তার এ বক্তব্য ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হতে যাওয়া জি২০ সম্মেলনে রাশিয়া ও পশ্চিমা নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মঞ্চ প্রস্তুত করল, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ওই সম্মেলনে ল্যাভরভই রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেইনে সেনা পাঠানোর পর এটাই প্রথম এ ধরনের সম্মেলন।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, ব্যস্ততার কারণেই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবারের জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে পারছেন না।

এবারের সম্মেলনের আলোচন্যসূচিতে ইউক্রেইনই প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলোও ওই ইস্যুতে সামনাসামনি রাশিয়ার কড়া সমালোচনার সুযোগ পাবে। তারা চীন ও ভারতকেও রাশিয়ার সমালোচনা করতে চাপ দেবে।

ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর চীন ও ভারত এজন্য মস্কোর সমালোচনা না করলেও সম্প্রতি যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার নম পেনে আসিয়ানের সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় ল্যাভরভ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করেন।

রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলো দক্ষিণপূর্ব এশিয়াকে সামনের দশকগুলোর কৌশলগত ভূরাজনৈতিক লড়াইক্ষেত্র মনে করে।

“যুক্তরাষ্ট্র এবং এর নেটো মিত্ররা এই অঞ্চলের প্রভু হতে চাইছে,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন ল্যাভরভ।

“জো বাইডেনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল হচ্ছে আঞ্চলিক সহযোগিতার ‘সমন্বিত কাঠামোকে’ বাইপাস করার চেষ্টা এবং এই অঞ্চলকে সামরিকীকরণ করা, যার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাশিয়ার স্বার্থকে নিয়ন্ত্রণে রাখ,” বলেছেন তিনি।

এদিকে বাইডেন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের বলেছেন, “ওয়াশিংটন এমন এক ইন্দো-প্যাসিফিক বানাতে প্রস্তুত যা অবাধ ও উন্মুক্ত, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ এবং উপযোগিতা ও নিরাপত্তা আছে।”

তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্বের উপরও জোর দিয়েছেন্।

রাশিয়া বা যুক্তরাষ্ট্র কেউই আসিয়ানের সদস্য নয়; তবে একাধিক বিশ্বনেতাই বালিতে কয়েকদিন পর হতে যাওয়া জি২০ সম্মেলনের আগে আসিয়ানের সম্মেলনে উপস্থিত হন।

ইউক্রেইনে সেনা পাঠানোর পর পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর যে বিপুল নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক. রাজনীতিক ও নিরাপত্তা ঘনিষ্ঠতা আরও জোরদার করতে চায়।

পুতিন রাশিয়া ও চীনতে সোভিয়েত পরবর্তী বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে আধিপত্য তার পাল্টায় চীন ও রাশিয়াকে বিদ্রোহী হিসেবে দেখাতে চাইছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও রাশিয়া ও চীনকে তাদের মূল দুই বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখে।