উত্তর আমেরিকার দেশটিতে এবার দাবানলের মৌসুম তুলনামূলক অনেক আগেই শুরু হয়েছে, এর তীব্রতাও ব্যাপক। সেখানে উষ্ণ ও শুষ্ক পরিস্থিতিও কয়েক মাস ধরে থাকবে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে।
Published : 07 Jun 2023, 02:44 PM
কানাডার পূর্বাঞ্চলে গ্রীষ্মের শুরুতেই নজিরবিহীন দাবানলের ধোঁয়ায় দূষিত বাতাসের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে নিউ ইয়র্ক, টরন্টো ও অটোয়ার কর্তৃপক্ষ।
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডায় এবার দাবানলের মৌসুম তুলনামূলক অনেক আগেই শুরু হয়েছে, এর তীব্রতাও ব্যাপক। এর ফলে দেশটি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে দাবানলের বছর দেখতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
দেশটিতে উষ্ণ ও শুষ্ক পরিস্থিতিও কয়েক মাস ধরে থাকবে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে।
কানাডার ১০টি প্রদেশ ও অঞ্চলের মধ্যে প্রায় সবগুলোতেই দাবানলের খবর পাওয়া যাচ্ছে, এর মধ্যে বজ্রপাতের কারণে একাধিক জায়গায় আগুন লাগা ক্যেবেকের পরিস্থিতিই সবচেয়ে খারাপ বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পার্শ্ববর্তী দেশে দাবানলের ধোঁয়া নিয়ে নিউ ইয়র্ক, ব্রঙ্কস, কুইনসসহ একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে নিউ ইয়র্ক রাজ্যের পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগ।
ঝুঁকি কমাতে বাসিন্দাদেরকে ঘরের বাইরের কর্মকাণ্ড সীমিত করার কথা বিবেচনায় নিতেও পরামর্শ দিয়েছে রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ।
দাবানলের ধোঁয়ায় মঙ্গলবার সকালে কানাডার রাজধানী ওটোয়াকে ধোঁয়াশায় ঢাকা অবস্থায় দেখা গেছে, সেখানকার বাতাসের মান ১০+ মাত্রায় পৌঁছেছে, এটা কানাডার বাতাসের মানজনিত স্বাস্থ্যতালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থান, যার অর্থ বাতাসে স্বাস্থ্যের ‘ঝুঁকি মারাত্মক’। অটোয়া ক্যেবেকের পাশে অবস্থিত।
“স্থানীয় দাবানল ও ক্যেবেকের দাবানলের ধোঁয়ায় বাতাসের মানের চরম অবনতি হয়েছে,” অটোয়ার বাতাসের মান নিয়ে সতর্কবার্তায় বলেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা।
টরন্টোর বাতাসও দূষিত হয়ে গেছে এবং এই পরিস্থিতি পুরো সপ্তাহ ধরেই চলতে পারে, বলেছে সরকার পরিচালিত আবহাওয়া সংস্থা।
সামান্য পরিমাণ দাবানলের ধোঁয়াও ক্ষতির কারণ হতে পারে। ফুসফুস বা হৃদরোগে আক্রান্তদের পাশাপাশি দাবানলের ধোঁয়ায় বৃদ্ধ, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্যও উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে, বলেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা।
মঙ্গলবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি দাবানল মোকাবেলায় দমকলকর্মী পাঠানোয় যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফ্রান্সকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
দাবানল কানাডার পশ্চিম প্রদেশগুলোতে নিয়মিতই দেখা যায়, কিন্তু এ বছর আগুন ছড়িয়েছে কানাডার পূর্বাঞ্চলে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে, যা সেসব এলাকায় লাখো লোককে ঘরবাড়ি ছাড়তে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে সামরিক বাহিনী পাঠাতে বাধ্য করেছে।
দাবানল এরই মধ্যে ওইসব এলাকার ৩৩ লাখ হেক্টর জমি পুড়িয়েছে, যা গত ১০ বছরের গড়ের চেয়েও ১৩ গুণ বেশি।
“কীভাবে নিরাপদে থাকা যায়, সে বিষয়ে লোকজন যেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কথা নিয়মিত শোনে, সে ব্যাপারে জোর দিতে চাই আমি, এমনকী অটোয়ার মতো এলাকাগুলোও, যেসব এলাকা দাবানলের ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত,” অটোয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।