বিরোধীদের বর্জনের মধ্যেই ভারতে নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন মোদীর

নতুন পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের তিনটি প্রধান ফটক আছে, সেগুলোর নাম জ্ঞান দ্বার, শক্তি দ্বার ও কর্ম দ্বার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2023, 06:50 AM
Updated : 28 May 2023, 06:50 AM

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ভবনটির উদ্বোধন কে করবেন, এই নিয়ে বিতর্কে ভারতের ১৯টি বিরোধীদল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বর্জন করে। দেশের প্রেসিডেন্টকে নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করতে না বলায় মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছে এসব দলগুলো।   

হিন্দু জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রবক্তা বিনায়ক দামোদর সাভারকরের জন্মবার্ষিকীতে এ অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছে বিরোধীদলগুলো, জানিয়েছে বিবিসি। 

বিরোধীদের এই বয়কটকে ‘গণতন্ত্রের অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ।

ভারতের রাজধানীকে ঔপনিবেশিকতার প্রতীক থেকে মুক্ত করতে মোদী সরকারের নেওয়া উদ্যোগ সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের অংশ দেশটির নতুন এই পার্লামেন্ট ভবন।

রোববার সকালে নতুন পার্লামেন্ট ভবনে স্বর্ণদণ্ড ‘সেঙ্গল’ স্থাপন করেন মোদী। বেদমন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে স্পিকারের আসনের পাশে বিশেষ এই দণ্ডটি স্থাপন করেন তিনি, এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় পার্লামেন্টের স্পিকার ওম বিড়লা। এরপরই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।

ব্রিটিশরা ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে এই স্বর্ণদণ্ড ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন বলে দাবি বিজেপির। কিন্তু তাদের এই দাবিকে ‘মিথ্যা ও আজগুবি’ অভিহিত করে উড়িয়ে দিয়েছে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস, এই সেঙ্গেলের বিষয়ে কোনো প্রামাণ্য নথি নেই বলে পাল্টা দাবি করেছে তারা।

নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধনের সময় ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে মোদী ৭৫ রুপির একটি কয়েনও মুক্ত করেছেন।  

ঔপনিবেশিক আমলের পুরনো পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ৯৭০ কোটি রুপি ব্যয়ে ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে ত্রিভুজাকৃতির চারতলা এই নতুন পার্লামেন্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, নতুন পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের তিনটি প্রধান ফটক আছে, সেগুলোর নাম জ্ঞান দ্বার, শক্তি দ্বার ও কর্ম দ্বার। নতুন লোকসভা হলে ৮৮৮টি আসন আছে, তবে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশন চলাকালে নিম্নকক্ষের এই হলে ১২৭২ জন সদস্য বসতে পারবেন। এই নিম্নকক্ষের নকশা করা হয়েছে ভারতের জাতীয় পাখি ময়ূরের আদলে।  

পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার নকশা করা হয়েছে ভারতের জাতীয় ফুল পদ্মের আদলে। 

গত বুধবার কংগ্রেসসহ ১৯টি বিরোধীদল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ‘সম্মিলিত সিদ্ধান্ত’ জানিয়ে দেয়।

কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও দলটির অন্যতম নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, পার্লামেন্টের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভবনটি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে দিয়ে উদ্বোধন করানো উচিত ছিল।

কংগ্রেসের এমপি জয়রাম রমেশ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সাভারকরের জন্মবার্ষিকীর দিনে করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “এমন একজন মানুষের জন্মবার্ষিকীর দিনে অনুষ্ঠানটি করা হচ্ছে যিনি সারাজীবন ধরে প্রবলভাবে মহাত্মা গান্ধীর বিরোধিতা করে গেছেন।”