ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহী তৎপরতার পর রুশ প্রধানমন্ত্রী এই একতার ডাক দিলেন।
Published : 26 Jun 2023, 07:20 PM
রাশিয়ার ‘স্থিতিশীলতা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে’ জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে জাতিকে একতাবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন।
রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহী তৎপরতার পর প্রধানমন্ত্রী এই একতার ডাক দিলেন।
সোমবার মিশুস্তিন টিভিতে সম্প্রচারিত এক সরকারি বৈঠকে বলেন, “রাশিয়ার স্থিতিশীলতা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হয়ে, একজোট হয়ে কাজ করা দরকার, সব বাহিনীর একতা রক্ষা করা দরকার।”
গত শনিবার হঠাৎ করেই ওয়াগনার সেনাদের একটি অংশ রাশিয়ার মস্কোর দিকে যাত্রা করে।ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দেন।
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ওয়াগনার সেনারা এক হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে মস্কোর ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিল।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ঠেলে দেয়, যে তিনি তার একসময়ের মিত্র প্রিগোজিনকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ দায়েও অভিযুক্ত করেন, এই সশস্ত্র বিদ্রোহকে অভিহিত করেন ‘রাশিয়ার পিঠে ছুরিকাঘাত’ হিসেবে।
যদিও শেষ পর্যন্ত ঘটনা বেশি দূর আগায়নি। কয়েকঘণ্টার উত্তেজনার পর বেলারুশের প্রেসিডেণ্টের মধ্যস্থতায় তা প্রশমিত হয়। শনিবার দিনের শেষভাগে ওয়াগনার প্রধান বিদ্রোহে ক্ষ্যান্ত দেন এবং সেনাদের ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু স্বল্প সময়ের এ বিদ্রোহের ঘটনা রাশিয়ার মিত্র কিংবা শত্রু উভয় দেশের সরকারেই নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমন বিদ্রোহের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় পামাণবিক অস্ত্রভান্ডার থাকা দেশ রাশিয়ায় কী ঘটতে চলেছে সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সবাই।
প্রিগোজিনের বিদ্রোহ পুতিনের কর্তৃত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছিল বলে রোববার মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
এরপরই রুশ প্রধানমন্ত্রী স্থিতিশীলতা হুমকিগ্রস্ত হওয়ার কথা বললেন। যদিও রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি বলছে, দেশের অবস্থা স্থিতিশীল।রাশিয়া কোনও সন্ত্রাস-বিরোধী পদক্ষেপও নেয়নি।
রাশিয়ার মিত্র চীন বলেছে, তারা জাতীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় মস্কোকে সমর্থন করে। কিন্তু ইউক্রেইনসহ তাদের কয়েকটি মিত্র পশ্চিমা দেশ একথাই বলছে যে, এই ডামাডোলে রাশিয়ায় ফাটলই সামনে এসেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বরেল লুক্সেমবার্গে সাংবাদিকদের বলেছেন, “রাজনৈতিক ব্যবস্থার নড়বড়ে অবস্থা প্রকাশ হয়ে পড়ছে এবং সামরিক ক্ষমতা ভেঙে পড়ছে।”