যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
Published : 31 Mar 2023, 09:08 AM
সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে অর্থ দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আর এমন এক সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হল, যখন তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আছেন।
বৃহস্পতিবার ম্যানহ্টনের গ্র্যান্ড জুরি আদালত তাকে অভিযুক্ত করে। কী কী অভিযোগে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিচার হবে, তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে সিএনএন জানিয়েছে, ব্যবসায়িক জালিয়াতির অন্তত ৩০ দফা অভিযোগ আনা হচ্ছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
ম্যানহ্টনে জুরিরা যখন অভিযোগ গঠনের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন, ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্প তখন ফ্লোরিডায় তার মার-এ-লাগোর বাড়িতে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, তিনি ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’।
"এটা রাজনৈতিক নিপীড়ন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ। যে মাত্রায় এটা করা হচ্ছে, তার নজির ইতিহাসে নেই।”
ট্রাম্প তার সমর্থকদের কাছে আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থও চেয়েছেন। গত ১৮ মার্চ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, অভিযুক্ত হলে বৃহস্পতিবারই তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এর পর থেকে ২০ লাখ ডলারের বেশি চাঁদা তিনি সমর্থকদের কাছ থেকে পেয়েছেন।
আর যার কারণে এই সাবেক প্রেসিডেন্টকে বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, সেই স্টর্মি ড্যানিয়েলস তার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এক টুইটে তিনি লিখেছেন, “আমি এত এত মেসেজ পাচ্ছি যে সবাইকে উত্তর দেওয়া সম্ভব না। আর আমি চাই না, আমার শ্যাম্পেন ছলকে পড়ুক।”
Thank you to everyone for your support and love! I have so many messages coming in that I can't respond...also don't want to spill my champagne ???? #Teamstormy merch/autograph orders are pouring in, too! Thank you for that as well but allow a few extra days for shipment.
— Stormy Daniels (@StormyDaniels) March 30, 2023
সাবেক পর্ন তারকা ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল এবং ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্প তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।
ওই অভিযোগ যখন ওঠে, ট্রাম্প তখনও হোয়াইট হাউজে। শুরু থেকেই তিনি ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। তবে বেশ কিছু অভিযোগে তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনের জেল হয়।
মার্কিন আইনে এভাবে অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, ড্যানিয়েলসকে দেওয়া ওই অর্থ তিনি কোহেনকে দেওয়া লিগ্যাল ফি হিসেবে দেখিয়ে ব্যবসার খরচ হিসেবে চালিয়েছেন । আর নিউ ইয়র্কের আইনে ব্যবসার নথিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দেওয়া ফৌজদারি অপরাধ।
এখন কী হবে
ম্যানহটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এলভিন ব্র্যাগের দপ্তর জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী ট্রাম্পকে এখন আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং সেজন্য ইতোমধ্যে তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
আর ট্রাম্পের আইনজীবী সুসান নেচেলেস জানিয়েছেন, তার মক্কেল আগামী মঙ্গলবার ম্যানহটনের আদালতে হাজির হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাম্প আদালতে হাজির না হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হলে, কিংবা তিনি আত্মসমর্পণ করলে তার আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে এবং আসামি হিসেবে তার ছবি (মাগ শট) নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানোর পাশাপাশি তার আইনি অধিকারগুলো জানানো হবে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা তখন জামিনের আবেদন করতে পারবেন। একজন বিচারক তখন সিদ্ধান্ত দেবেন, ট্রাম্পকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে, নাকি কারাগারে পাঠানো হবে।