মাউইর লাহাইনা শহরে ব্যাপক বিপর্যয়ের পর এক সপ্তাহ পার হলেও নিখোঁজ কয়েকশ মানুষের সন্ধান এখনও মেলেনি।
Published : 15 Aug 2023, 04:34 PM
হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপের দাবানলে লাহাইনা শহরের পুড়ে যাওয়া এলাকাগুলোর ২৫ শতাংশ অংশে তল্লাশি সম্পন্ন করেছেন উদ্ধারকর্মীরা, সঙ্গে ছিল শবসন্ধানী কুকুর।
সোমবার তারা দাবানলে পুড়ে মারা যাওয়া ৯৯তম ব্যক্তির দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু বিপর্যয়ের পর এক সপ্তাহ পার হলেও নিখোঁজ কয়েকশ মানুষের সন্ধান এখনও মেলেনি।
গত মঙ্গলবার মাউইর ঐতিহাসিক শহর লাহাইনায় ছড়িয়ে পড়া দাবানলে ব্লকের পর ব্লক পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শহরের বাইরে তৃণভূমিতে প্রথম দাবানল শুরু হয়েছিল। হাওয়াইয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া একটি হারিকেন থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৮ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা বাতাসের তোড়ে শুষ্ক তৃণভূমিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন জানিয়েছেন, এক পর্যায়ে তাপমাত্রা ৫৩৮ সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল।
শতাধিক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এ দাবানলে ২২০০টিরও বেশি ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এগুলোর ৮৬ শতাংশই আবাসিক ছিল। মোট ক্ষতির পরিমাণ ৫৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে মাউই কাউন্টির পুলিশ প্রধান জন পেলেটিয়ার জানিয়েছেন, আগামী রোববারের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ তল্লাশি সম্পন্ন হবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।
আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ধাতুর কাঠামোগুলোও গলে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাই নিহতদের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেলেও সেগুলো শনাক্ত করা খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন তারা।
মাউই কাউন্টি কর্তৃপক্ষ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নিয়ম শিথিল করে লাহাইনার বাসিন্দাদের তাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কৌতুহলী লোকজন উদ্ধারকারীদের ব্যবহৃত রাস্তায় জটলা করে তা আটকে রাখায় ও নিয়ম লঙ্ঘন করায় সোমবার সে সুযোগ বাতিল করা হয়। নিহত মানুষের দেহাবশেষ পদদলিত হয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
গমন নিষিদ্ধ এলাকায় অনুপ্রবেশের দায়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে পেলেটিয়ার জানিয়েছেন।
‘সঠিক অবস্থান জানা নেই’ এমন ১১৩০ ব্যক্তির একটি তালিকা সোমবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বজনদের জমা দেওয়া তথ্য ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ‘নিখোঁজ ব্যক্তি’ বলে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের তথ্য নিয়ে এই তালিকাটি করা হয়েছে।
রোববার ৬০ জন ‘নিখোঁজ’ এর সন্ধান পেয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা একটি বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ না থাকায় তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দাবানলের কারণ এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। লাহাইনার অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, শহরজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে তারা কোনো সতর্ক বার্তা পাননি। আগুন থেকে বাঁচতে কিছু লোক পাশের প্রশান্ত মহাসাগরে পর্যন্ত ঝাঁপ দিয়েছিলেন।
পর্যটকদের পশ্চিম মাউই থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে দ্বীপটির অন্য পাশে পর্যটকদের যেতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
আরও খবর: