দুই ব্রিটিশ কূটনীতিককে দু’সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া ছাড়তে বলা হয়েছে।
Published : 11 Mar 2025, 12:07 AM
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের আলোচনার মধ্যেই দুই ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করছে রাশিয়া। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে সোমবার তাদেরকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া ছাড়তে বলা হয়েছে।
এতে ইউরোপের সঙ্গে অবনতি হতে থাকা রাশিয়ার সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকল। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
রয়টার্স লিখেছে, ইউক্রেইনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখা এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাম্প্রতিক মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে মস্কো।
স্টারমার বলেছিলেন, সম্ভাব্য শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে ব্রিটিশ সেনাদের ইউক্রেইনে মোতায়েন করা হতে পারে এবং যুদ্ধবিমানও মোতায়েনের সম্ভাবনা আছে।
বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এল, যখন লন্ডনের একটি আদালত তিন বুলগেরীয় নাগরিককে রাশিয়ার একটি গুপ্তচর ইউনিটের সদস্য হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
এই বুলগেরীয়রা ওয়্যারকার্ডের পলাতক কর্মকর্তা ইয়ান মারসালেক পরিচালিত রুশ গুপ্তচর ইউনিটের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি এবং মস্কোর লক্ষ্যবস্তুতে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য কাজ করছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুই ব্রিটিশ কূটনীতিকই সম্ভবত প্রথম পশ্চিমা কূটনীতিক যাদেরকে রাশিয়া বহিষ্কার করছে। তাও এমন এক সময়ে, যখন মস্কো ও ওয়াশিংটন তাদের একে অপরের দূতাবাসগুলোতে স্টাফ পুনর্বহাল করা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। ক্রেমলিনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক এমন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
এর আগে ২০২২ সালে ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পাল্টাপাল্টি দূত বহিষ্কারের ফলে পশ্চিমা দেশগুলোতে রাশিয়ার দূতাবাসের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছিল। একইভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর কার্যক্রমও রাশিয়ায় সীমিত হয়ে পড়েছিল।
রাশিয়ার ফেডারেল নিরাপত্তা সংস্থা (এফএসবি) জানিয়েছে, ওই দুই ব্রিটিশ কূটনীতিক দেশে প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার সময় ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। সংস্থাটি বলছে, তাদের কর্মকাণ্ডে ‘গুপ্তচরবৃত্তি ও অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতার’ লক্ষণ পাওয়া গেছে, যা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বহিষ্কার সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসের এক প্রতিনিধিকে তলব করেছে এবং অভিযোগ করেছে, ওই দুই কূটনীতিক ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থার ‘অঘোষিত’ সদস্য, যা মস্কো কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, যদি ব্রিটেন এ ঘটনায় উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করে, তবে রাশিয়াও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার সম্পর্ক যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে। যুক্তরাজ্য একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইউক্রেইনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।