ইমরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পার্লামেন্টে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আবেদন

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের ‍অভিযোগ, পুলিশ যখনই ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছে, তখনই তার সমর্থকরা তাতে বাধা দিতে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় লিপ্ত হচ্ছে।

রয়টার্স
Published : 28 March 2023, 04:02 PM
Updated : 28 March 2023, 04:02 PM

পার্লামেন্টের কাছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

শাহবাজের ‍অভিযোগ, পুলিশ যখনই ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছে, তখনই তার সমর্থকরা তাতে বাধা দিতে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় লিপ্ত হচ্ছে।

তোষাখানা মামলায় পরপর কয়েকটি শুনানিতে উপস্থিত না হওয়ায় ইমরানের বিরুদ্ধে আদালত থেকে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে এ মাসের শুরুর দিকে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী ইমরানকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে গেলে আগে থেকেই সেখানে জড়ো হওয়া ইমরান সমর্থকদের প্রবল বাধার মুখে তাদের খালি হাতেই ফিরতে হয়।

যার জেরে গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ পার্লামেন্ট থেকে একটি আদেশ জারির আহ্বান জানান, যাতে প্রশাসন ইমরানের দলের কর্মী-সমর্থকদের ধরপাকড়ের ক্ষমতা হাতে পায়।

মঙ্গলবার শাহবাজ পার্লামেন্টে এক ভাষণে বলেন, ‘‘আপনারা কী কখনো দেখেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে কাউকে গ্রেপ্তার করতে গেছে এবং গিয়ে পেট্রোল বোমা হামলার শিকার হয়েছে?

‘‘আমি পার্লামেন্টের কাছে আবেদন করছি, এ ধরনের বিষয়গুলো এখনই বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। যদি আমরা পাকিস্তানকে রক্ষা করতে চাই তবে এখনই পার্লামেন্ট থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে! এখন আইনকে তার নিজ গতিতে চলতে দিতে হবে।”

শাহবাজের এই ভাষণ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ইমরানের বিরুদ্ধে কী ধরণের ব্যবস্থা চাইছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ।

তবে শাহবাজ সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আহ্বান জানান। সরকারও পার্লামেন্টের কাছে একই আবেদন করেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গত বছর পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ইমরান খান। তারপর শাহবাজের নেতৃত্বে বর্তমান জোট সরকার গঠিত হয়।

শাহবাজ সরকারের অভিযোগ, ইমরানের সমর্থকদের মধ্যে ইসলামপন্থি জঙ্গিরাও রয়েছে। ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর থেকেই ইমরান নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে, চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তান সরকার বলছে, নির্বাচন আয়োজনের মতো তহবিল তাদের হাত নেই।

এ বছর নভেম্বরে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইরমানের অভিযোগ, বর্তমান সরকার এবং দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনী তাকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে।

যে কারণে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার কোনোটিতে যদি ইমরান দোষীসাব্যস্ত হয়ে সাজা পান, তবে পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য ঘোষিত হবেন।