এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তাই চন্দ্রবাবু নাইডু আর নীতিশ কুমার হয়ে উঠেছেন ‘কিং মেকার’।
Published : 09 Jun 2024, 11:38 AM
নরেন্দ্র মোদী টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে তার সম্ভাব্য মন্ত্রিসভা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। শরিকরা কে কোন দপ্তর ভাগে পাচ্ছেন, চলছে সে আলোচনাও।
মোদীর দল বিজেপি টানা তৃতীয় নির্বাচনে জয় পেলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলেনি এবার। ফলে ক্ষমতা ধরে রাখতে এনডিএ জোটের শরিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে মোদীকে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং নীতিশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিভি লিখেছে, টিডিপি থেকে চারজন এবং জেডিইউর দুজনকে দেখা যেতে পারে মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায়।
নাইডু দলের সম্ভাব্য চার মন্ত্রীর মধ্যে তিনজনের নামও প্রকাশ করেছে এনডিটিভি। তারা হলেন– রাম মোহন নাইডু, হরিশ বালাযোগী এবং দগ্গুমাল্লা প্রসাদ রাও।
নীতিশ কুমার তার দলের দুই প্রবীণ নেতা লালন সিং এবং রামনাথ ঠাকুরের নাম প্রস্তাব করেছেন মন্ত্রিসভার জন্য। তাদের মধ্যে লালন সিং বিহারের মুঙ্গের থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর ভারতরত্ন পাওয়া কর্পুরি ঠাকুরের ছেলে রামনাথ রাজ্যসভার এমপি।
এনডিটিভি লিখেছে, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) শরিকদের মধ্যে কোন দল কয়জন মন্ত্রী পাচ্ছে, নতুন সরকারের শপথের আগে জোটের এক বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হয়।
লোকসভায় ১৬টি আসন পাওয়া টিডিপি ওই বৈঠকে চারজন মন্ত্রীর পাশাপাশি স্পিকারের পদটিও চেয়েছিল। আর ১২টি লোকসভা আসন পাওয়া জেডিইউ দাবি করেছিল মন্ত্রিসভার দুটো পদ।
ভারতে সরকার গঠনের জন্য লোকসভার অন্তত ২৭২ এমপির সমর্থন প্রয়োজন হয়। এবারের নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটগতভাবে ২৯৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৪০ আসন, ফলে তৃতীয়বারের মত মোদীর নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর সে কারণেই নীতিশ-নাইডুরা হয়ে উঠেছেন কিং মেকার।
শুক্রবার এনডিএ এর বৈঠকের পরই বিজেপি নেতা জেপি নাড্ডা জোটসঙ্গী জেডিইউ, জেডিএস, এনসিপি (অজিত পওয়ার), শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) ও এলজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ ও রাজনাথ সিংও।
বৈঠকের পরই টিডিপির রামমোহন নাইডু, এলজেপির জয়ন্ত চৌধুরী, জেডিইউ এর ললন সিং, জেডিএসের কুমারস্বামী, আপনা দলের অনুপ্রিয়া পটেল, এলজেপির চিরাগ পাসওয়ানের নাম উঠে আসে সম্ভাব্য মন্ত্রী হিসাবে।
তবে শরিকরা কে কোন দপ্তর পাচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এখন পর্যন্ত যে আভাস পাওয়া গেছে, তাতে স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রাণলয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ চারটি মন্ত্রণালয় হাতে রাখবে বিজেপি।
এনডিটিভি লিখেছে, নরেন্দ্র মোদী রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার শপথ হবে কয়েকদিন পর। তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রী পদে রোববারই শপথ হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ৩০ জন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন। এর মধ্যে বিজেপির মন্ত্রীদের সংখ্যাই বেশি হবে। শরিক দলগুলির কয়েকজনও শপথ নিতে পারেন।
শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এরই মধ্যে দিল্লি পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিসহ সাত বিদেশি নেতা যোগ দেবেন রাইসিনা হিলে রাষ্ট্রপতি ভবনের এ অনুষ্ঠানে।
সবমিলিয়ে শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন আট হাজার অতিথি । শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে দিল্লিতে সর্বোচ্চ সতকর্তা জারি করা হয়েছে।