এ তালিকায় জার্মানির লাইপজিগ, হামবুর্গ, ডুসেলডর্ফ, ফ্রান্সের বরদো, রেন, লিওঁ ও স্ত্রাসবুর্গ, ইতালির ফ্লোরেন্স, ব্রাজিলের বেলো হরিজোন্তে ও পর্তুগালের পন্তা দেলগাদা আছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
Published : 07 Mar 2025, 03:04 PM
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামনের মাসগুলোতে পশ্চিম ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকা থেকে প্রায় এক ডজন কনস্যুলেট গুটিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ও বিশ্বজুড়ে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা।
ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তরে মানবাধিকার, শরণার্থী, বৈশ্বিক ন্যায়বিচার, নারী সংক্রান্ত বিষয় ও চোরাচালান প্রতিরোধের মতো যেসব বিশেষজ্ঞ ব্যুরো আছে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সেগুলোকেও একীভূত করার পরিকল্পনা করছে, বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ওই কর্মকর্তারা।
এর আগে গত মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্ক সরকারি ব্যয় কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মীবহর ছোট করে আনার যে নজিরবিহীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তার অংশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোকে মার্কিনিদের পাশাপাশি স্থানীয় কর্মীদেরও অন্তত ১০ শতাংশকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা হাতে নিতে বলা হয়েছে।
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়া রিপাবলিকান ট্রাম্প চান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলাতন্ত্র তার ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নেবে।
‘বিশ্বস্ত ও কার্যকরভাবে’ পররাষ্ট্র নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুনর্গঠনে গত মাসে তিনি একটি নির্বাহী আদেশও জারি করেছিলেন।
নির্বাচনী প্রচারের সময়ও ট্রাম্প বিশ্বাসঘাতক মনে হওয়া আমলাদের বরখাস্ত করে ‘ডিপ স্টেটকে নির্মূল করার’ অঙ্গীকার বারবার পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন।
তবে সমালোচকরা বলছেন, একদিকে বিশ্বজুড়ে শত শত কোটি ডলারের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া ইউএসএআইডিকে কার্যত বন্ধ করে দেওয়া, আবার অন্যদিকে মার্কিন কূটনীতিক বহর ছোট করে আনা, এই দুইয়ের কারণে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দেবে, বিপজ্জনক শূন্যতা সৃষ্টি হলে রাশিয়া ও চীনের মতো বৈরি দেশগুলো সেটার সুযোগ নেবে।
ট্রাম্প আর মাস্ক বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের আকার অহেতুত এত বড় করা হয়েছে যে এখানে করদাতাদের অর্থ অপচয় হচ্ছে, অনেকে জালিয়াতি করার সুযোগ পাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে তাদের কূটনৈতিক মিশনের সংখ্যা ২৭০টির বেশি, মোট কর্মীর সংখ্যা ৭০ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজারই স্থানীয় দেশগুলো থেকে নিয়োগ পাওয়া।
ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়টি এখন যেসব ছোট কনস্যুলেটগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে তার মধ্যে জার্মানির লাইপজিগ, হামবুর্গ, ডুসেলডর্ফ, ফ্রান্সের বরদো, রেন, লিওঁ ও স্ত্রাসবুর্গ এবং ইতালির ফ্লোরেন্স আছে বলে জানিয়েছেন তিন কর্মকর্তা।
কর্মীরা খোলা রাখার জন্য উপযুক্ত যুক্তি দেখাতে পারলে শেষ পর্যন্ত এই তালিকার কিছু নাম বদলেও যেতে পারে, বলেছেন তারা।
বন্ধ হতে যাওয়া কনস্যুলেটগুলোর তালিকায় ব্রাজিলের বেলো হরিজোন্তে ও পর্তুগালের পন্তা দেলগাদাও আছে বলে জানিয়েছেন অনামা এ কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, “আমেরিকান জনগণের হয়ে আধুনিক সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা যে সেরা অবস্থানে আছি তা নিশ্চিত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বব্যাপী নিজেদের হালচাল পর্যালোচনা অব্যাহত রেখেছে।”