ঋণ সহায়তা পেতে ব্যয় সঙ্কোচনে দাতাদের শর্তের মুখে ভোটাভুটির আয়োজন করা হলেও নতুন মুদ্রা ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে গ্রিস।
Published : 06 Jul 2015, 04:11 AM
এরই মধ্যে দেশটিতে জনমত জরিপ ছাড়াও বেশিরভাগ ভোট গণনা শেষেও দাতাদের শর্ত মেনে ঋণ সহায়তা না নেওয়ার পক্ষেই নাগরিকরা রায় দিয়েছেন।
দেশটির শীর্ষ ব্যাংকারদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর উপ-অর্থমন্ত্রী দিমিত্রিস মারদাস সাংবাদিকদের বলেন, “এই গণভোটের মাধ্যমে যে বার্তা এসেছে তা হলো- ইউরোপকে ‘হ্যাঁ’, ইউরোকে ‘হ্যাঁ’, তবে দাতাদের শর্তকে ‘না’।”
তিনি ইউরোর পাশাপাশি গ্রিসে অন্য কোনো মুদ্রা ছাড়ার কথাও নাকচ করে দেন।
এর আগে ঋণ সহায়তা পেতে গ্রিসের পক্ষে দাতাদের সঙ্গে আলোচনার সমন্বয়ক এসক্লিদিস সাকালোতসও প্রায় একই মন্তব্য দেন একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
স্টার টিভিকে তিনি বলেন, তারা ইউরোর পাশাপাশি অন্য কোনো মুদ্রা ছাড়ার কথা ভাবছেন না।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি না... আমাদের ছুড়ে ফেলা হবে। আমরা তাদের সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে বসার ক্ষেত্রে প্রস্তুত রয়েছি।”
জনগণের মত নিতে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ ভোটের আয়োজন করা হলেও ইউরো জোনের নীতিনির্ধারকরা এরই মধ্যে সতর্ক করে বলেছেন, ‘না’ ভোটের পক্ষে জনমত গেলে সমস্যা থেকে উত্তরণে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে গ্রিসের ঋণ পাওয়ার পথকে কঠিন করে তুলবে।
২০১০ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফ থেকে দুটি বেইল আউটে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ইউরো নেয় গ্রিস। এই অর্থে চলতে থাকে দেশটি, যদিও তার জন্য নাগরিকদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ সময়ে পেনশন, বেতন ও সরকারি সেবায় কাটছাঁট হয় গ্রিসে।
নতুন করে সহায়তার জন্য (বেইল আউট) গ্রিসকে কর বাড়ানোর পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক ব্যয় কমানোসহ কঠিন আর্থিক পুনর্গঠনের শর্ত দেয় ইউরোজোন।
ইউরোজোনের সঙ্গে টানাপোড়েনে মধ্যে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকগুলো বন্ধ রাখে সরকার, পাশাপাশি এটিএম বুথ থেকে দিনে ৬০ ইউরোর বেশি না তোলার বিধান জারি হয় গ্রিসে।
তবে আর্থিক পুনরুদ্ধারে (বেইলআউট) জন্য দাতাদের দেওয়া শর্তগুলো মর্যাদাহানিকর বলে সমালোচনা করে আসছে গ্রিসের ক্ষমতাসীন বামপন্থি সিরিজা পার্টি।
অবশ্য ‘হ্যাঁ’ পক্ষের সমর্থকদের ধারণা দাতাদের প্রস্তাব মেনে না নিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থার পতনের মধ্য দিয়ে পুরনো ড্রাকমা মুদ্রায় ফিরে যাওয়া তাদের আরও বেশি বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিবে।