সিরিয়ায় ইদলিবে গত মাসে ক্লোরিন গ্যাস হামলা পরবর্তী পরিস্থিতির ভিডিও দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা।
Published : 17 Apr 2015, 07:09 PM
ভিডিওতে দেখা যায়, চিকিৎসকরা তিনটি শিশুকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পেরে উঠছেন না। প্রাণ হারানো তিনটি শিশুরই বয়স চার বছরের কম।
এসময় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার ‘খুবই আবেগপ্রবণ’ হয়ে পড়েন এবং বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের জবাবদিহি করা হবে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকার এ হমলার দায় অস্বীকার করেছে। ইদলিবের সারমিন গ্রামে ১৬ মার্চ ওই হামলা চালানো হয়।
সিরিয়ার চিকিৎসক দল ও সমাজকর্মীরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ওইদিন সারমিন গ্রামের ওপর দিয়ে কয়েকবার হেলিকপ্টার উড়ে যাওয়ার শব্দ শোনা গেছে।
এরপর সেখানে ধপ করে একটি শব্দ হয় এবং ব্লিচের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই বহু মানুষ শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভিড় জমাতে শুরু করে।
ভিডিও’তে দেখা যায় চিকিৎসকরা এক, দুই ও তিন বছর বয়সী ওই তিনটি শিশু ছাড়াও তাদের দাদী ও বাবা-মা কে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
ভিডিও’তে এ ঘটনা দেখ জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা মুষড়ে পড়েন বলে বিবিসি’কে জানান সিরিয়ায় ‘আমেরিকান মেডিকেল সোসাইটি’র প্রধান জাহের সাহলুল।
“তাদের কেউ কেউ কাঁদছিলেন। ভিডিওতে তারা যা দেখছেন, যা শুনছেন সেটি যে তাদের মর্মাহত করেছে তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল। তাদের অনেকেই কুটনৈতিক ভাষায় কথা না বলে বরং সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের বলতে শোনা যায়, এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ এবং দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত।”
সভাকক্ষ থেকে বের হয়ে এসে সামান্থা পাওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, “জানিনা কক্ষের ভেতরে কারো চোখ শুকনো ছিল কিনা, আমি তো তেমনটা দেখিনি।”
মাত্র কয়েকদিন আগেই নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ায় সংঘর্ষে ক্লোরিনের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে পরবর্তীতে অস্ত্র হিসেবে এ ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার হলে সামরিক অভিযানের হুমকি দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বাশার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলে আসছে।
যদিও রাশিয়ার মত সিরিয়ার মিত্র দেশগুলো যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়া বাশার সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিশ্বের দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বাধা দিচ্ছে।