যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বলেছেন ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি তাকে দায়ী বলে মনে করেন।
Published : 16 Jul 2022, 10:05 AM
শুক্রবার সৌদি আরব সফরের প্রথমদিন বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে বাইডেন জানান, সৌদি যুবরাজ (এমবিএস হিসেবে পরিচিত) খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন আর জানান দায়ীদের জবাবদিহিতার জন্য আটক করেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাইডেন এমবিএসের সঙ্গে ‘ফিস্ট বাম্প’ এবং বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজের সঙ্গে করমর্দন করেছেন।
সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, “বৈঠকের শুরুতেই আমি খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের কথা তুলেছি, ওই সময় এ বিষয়ে আমি কী ভাবতাম আর এখন কী ভাবি তা পরিষ্কার করেছি।
“আমি সোজাসাপটা এবং সরাসরি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার করে দিয়েছি। আমি অত্যন্ত সোজাসাপটাভাবে বলেছি, মানবাধিকারের একটি ইস্যুতে একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের নিশ্চুপ থাকাটা অসঙ্গতিপূর্ণ।”
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সৌদি আরবের রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠজন থেকে পরে কট্টর সমালোচকে পরিণত হওয়া খাশুগজিকে হত্যার বিষয়টি যুবরাজ মোহাম্মদ সরাসরি অনুমোদন করেছেন। তারা নির্দেশেই সৌদি গোয়েন্দারা তুরস্কে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ২০১৮ সালে খাশুগজিকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
খাশুগজির ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত ভয়ানক বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন।
“মূলত তিনি বলেছেন যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এর জন্য দায়ী নন,” বৈঠকে সৌদি যুবরাজ এমনটি বলেছেন বলে জানান বাইডেন; এরপর বলেন, “আমি ইঙ্গিত দিয়েছি আমি মনে করি তিনি দায়ী।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানান, তাদের মধ্যে জ্বালানি নিয়েও কথা হয়েছে এবং আসছে সপ্তাহগুলোতে সৌদি আরব জ্বালানির বিষয়ে ‘পদক্ষেপ নিচ্ছে’ এমনটি দেখার আশা করছেন তিনি।
যখন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন তখন বাইডেন বলেছিলেন, এ হত্যাকাণ্ডের কারণে বিশ্ব মঞ্চে সৌদি আরবকে ‘অস্পৃশ্য’করে রাখা উচিত। শুক্রবার বাইডেন জানিয়েছেন, আগের ওই মন্তব্যের জন্য তিনি দুঃখিত নন।
জ্বালানি ও নিরাপত্তা স্বার্থের কারণে বিশ্বের শীর্ষ তেল সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবকে ‘অস্পৃশ্য’ করে রাখার ধারণা থেকে সরে এসেছেন বাইডেন ও তার সহযোগীরা, কারণ এরইমধ্যে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে চলছে মধ্যপ্রাচ্যের এ প্রভাবশালী দেশটি।
সৌদি যুবরাজের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাক্ষাৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচনা শুরু হয়েছে, দুজনের ‘ফিস্ট বাম্পের’ পর থেকেই এটি শুরু হয়েছে, জানিয়েছে রয়টার্স।
বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে পূর্বসতর্কতা হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট করমর্দনের মতো ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এড়িয়ে যাবেন। কিন্তু সফর শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল পর্বেই করমর্দনের মাধ্যমে সেই ধারণার ইতি ঘটনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন :