Published : 13 Nov 2021, 09:41 AM
জাতিসংঘের এই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বার্ষিক সম্মেলন শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল; কিন্তুু কোনো ঘোষণা বা চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়ায় আয়োজনের কাল একদিন বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার স্থানীয় সময় বিকালে সম্মেলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আনুষ্ঠানিক অধিবেশন বলে জানিয়েছেন কপ২৬ এর প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা।
এখন যেসব বিষয় নিয়ে দরকষাকষি চলছে তার মধ্যে কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানিতে ভর্তুকি প্রসঙ্গ এবং দরিদ্র দেশগুলোকে কী পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে তা-ই প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়া ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর দূতরা শুক্রবার বলেছেন, তাদের ভূখণ্ড ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক প্রভাব এড়ানো যাবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে এ লক্ষ্য অর্জনে বেশিরভাগ দেশ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল।
লক্ষ্য অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমানো, আর ২০৫০ সালের মধ্যে মোটামুটি শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসা দরকার।
শুক্রবার কপ২৬ এ যে চুক্তির খসড়া প্রকাশিত হয়েছে তাতে কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে জোরাল বক্তব্য নেই বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
পরিবেশকর্মীরাও চুক্তির এ খসড়ার তুমুল সমালোচনা করেছেন; তবে অনেকেই বলছেন, জাতিসংঘের এ ধরনের কোনো নথিতে কয়লার কথা এভাবে আগে কখনোই আসেনি, জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে ‘এই অগ্রগতিও কম নয়’।
কপ২৬ এ এখন পর্যন্ত যত প্রতিশ্রুতি এসেছে তাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়েও ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি বেশিতে পৌঁছানোর পথে রয়েছে, এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার।
চূড়ান্ত চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে ভর্তুকির বিরোধিতা করে লেখা অংশটুকু না রাখতে যেসব দেশ চাপ দিচ্ছে তার মধ্যে চীন ও সৌদি আরবও আছে বলে আলোচনাঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তবে শুক্রবার প্রকাশিত খসড়াটিতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনা জানাতে সময়সীমা বেধে দেওয়ার উপর ব্যাপক জোর দেওয়া হয়েছে।
লন্ডন থেকে দেওয়া ভাষণে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জলবায়ু তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ দিতে ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গরিব দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরিয়ে আনতে ‘টেবিলে আরও অর্থ ঢালো’, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য ধনী দেশগুলোকে বলেছেন তিনি।
২০০৯ সালে উন্নত দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে দরিদ্র দেশগুলোর সহযোগিতায় জলবায়ু তহবিলে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত তারা তাদের কথা রাখতে পারেনি।