নিজ দেশের নারী ফুটবলারদের বুক নিয়ে এক মন্তব্যের জন্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান।
Published : 23 Aug 2021, 10:27 PM
রোববার এক অনুষ্ঠানে তার দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে তিনি বলেছেন, নারী ফুটবলারদের বুক সমতল এবং তার বিয়ের পাত্রী হিসেবে আকর্ষণীয় নয়।
আঞ্চলিক এক টুর্নামেন্টে জয়ী তানজানিয়ার পুরুষ যুব ফুটবল দলের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সামিয়ার এমন মন্তব্য আসে।
তবে তিনি নারী ফুটবলারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বলতে গিয়ে ওই মন্তব্য করে ফেলেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়।
তিনি বলছিলেন, “যাদের বক্ষদেশ সমান, আপনি নিশ্চয়ই ভাববেন, এরা কি পুরুষ না কি নারী? আর আপনি যদি তাদের মুখের দিকে তাকান, তবে চমকে যাবেন, কেননা বিয়ে করার জন্য আপনি নিশ্চয়ই একটি আকর্ষণীয় মুখই খুঁজতে চাইবেন।”
“মেয়েদের যা কিছু পুরুষরা পছন্দ করে, তাদের (নারী ফুটবলার) তো সেগুলো বিলীয়মান,” বলেন তিনি।
একজন নারী ফুটবলার ক্রীড়া নৈপুণ্য দিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করলেও পরে তিনি কী পান, সেই প্রশ্নও সবাইকে করতে বলেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া।
তিনি বলেন, “আজ কারা ট্রফি এনে আমাদের দেশকে গর্বিত করছে। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ কী? যখন তার পা খেলার সামর্থ্য হারাবে, তখন তার জন্য কেমন জীবন আমরা রাখছি?
“বিয়ে, সে তো তাদের কাছে দূরের এক স্বপ্ন। কারণ কোনো পুরুষ যদি তাদের কাউকে বিয়ে করেও, বাড়িতে গেলে তার মা-ই তো বলবে, বউ কি পুরুষ, না মেয়ে?”
বলার উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, তা নিয়েই প্রেসিডেন্ট সামিয়া সমালোচনায় পড়েছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
তানজানিয়ার বিরোধী দল চাদেমা পার্টির নারী শাখার প্রধান ক্যাথরিন রুজ বলেছেন, “তার এই বক্তব্য গোটা নারী সমাজের জন্যই অবমাননাকর।”
জেন্ডার গবেষক একজন প্রশ্ন করেছেন, “তাহলে আর নারীর অধিকার রইল কই?”
হেনরি নগোগো নামে আরেকজন বলেছেন, “এর মানে কি এটাই যে বিয়ে ছাড়া নারীর গতি নাই।”
প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে বিবিসি আফগানিস্তানের ফুটবল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।
প্রেসিডেন্ট জন মাগাফুলির আকস্মিক মৃত্যুতে গত মার্চেই তানজানিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন ৬১ বছর বয়সী সামিয়া। এর আগে দেশটিতে কোনো নারী শীর্ষ পদে যেতে পারেনি।
সামিয়া সম্প্রতি বিবিসিকে বলেছিলেন, একজন নারী হওয়ায় তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনেকের সংশয় ছিল।
তিনি বলেছিলেন, “এমনকি সরকারে আমার কিছু সহকর্মীরও এমন সংশয় ছিল। কিন্তু এখন তারা আমার নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে।”