দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা আদালত অবমাননার দায়ে হওয়া ১৫ মাসের কারাবাসের সাজা খাটতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
Published : 08 Jul 2021, 10:33 AM
বুধবার তিনি নিজেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে বাহিনীটির এক মুখপাত্রের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পুলিশের মুখপাত্র লিরাল্ডজু থেম্বা এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন, জুমা পুলিশ হেফজাতে ছিলেন।
সাংবিধানিক আদালতের রায় মেনে চলতে সাবেক প্রেসিডেন্ট এ পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পৃথক এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সংশোধন পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, জুমাকে এস্টকোর্ট কারেকশনাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
জুমাকে বহনকারী গাড়িবহর এই কেন্দ্রে প্রবেশ করছে, এ দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
এই কেন্দ্রটি দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় এনকান্ডলা থেকে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার দূরে। জুমার গ্রামের বাড়ি এই এনকান্ডলায়।
২০১৮ পর্যন্ত তার নয় বছরের শাসনামলে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে চলা তদন্তে প্রামাণিক তথ্য দেওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারিতে জুমাকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এই নির্দেশ না মানায় গত সপ্তাহে জুমাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত। দক্ষিণ আফ্রিকার উপপ্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোনডো ওই তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বুধবারের মধ্যে কোনো থানায় উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ না করলে জুমাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকে। তার গ্রেপ্তার প্রতিরোধের চেষ্টায় শত শত সমর্থক জুমার গ্রামের বাড়ির কাছে জড়ো হয়, তাদের কিছু অংশ বন্দুক, বর্শা ও ঢালে সজ্জিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৭৯ বছর বয়সী জুমা শান্তভাবে আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেন।
তার ফাউন্ডেশন বলে, “প্রেসিডেন্ট জুমা কারাদণ্ডের আদেশ মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
ক্ষমতায় থাকাকালে জুমা ভারতীয় বংশোদ্ভুত তিন ব্যবসায়ী অতুল, অজয় ও রাজেশ গুপ্তাকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও সরকারি নীতি লঙ্ঘন করে ব্যবসা করার সুযোগ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে জোনডো কমিশন।
জুমা ক্ষমতা ছাড়ার পর গুপ্তা ভাইয়েরা দুবাই চলে যায়। জুমা ও গুপ্তা ভাইয়েরা বেআইনি কিছু করার কথা অস্বীকার করেছেন।
১৯৯৯ সালে ডেপুটি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে করা দুই বিলিয়ন ডলারের একটি অস্ত্র চুক্তি সংক্রান্ত পৃথক আরেকটি মামলাও আছে জুমার বিরুদ্ধে।
কিন্তু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাবেক এ প্রেসিডেন্ট বলে আসছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এবং জোনডো কমিশন তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।