বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি জেবিএসের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সাইবার হামলার শিকার হয়েছে।
Published : 02 Jun 2021, 02:07 PM
এই হামলার ফলে মাংসের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়ে ভোক্তা পর্যায়ে মাংসের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিবিসি।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি বলছে, সাইবার হামলার কারণে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে জেবিএসের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে তাদের হাজার হাজার কর্মীর ওপর।
রাশিয়াভিত্তিক একটি অপরাধচক্র মুক্তিপণ আদায়েরর জন্য র্যানসামওয়্যার বা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই হামলা চালিয়েছে বলে কোম্পানির কর্মকর্তাদের ধারণা।
এফবিআই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউজ সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে এবং দায়িত্বশীল কোন রাষ্ট্র যে মুক্তিপণ আদায়কারী অপরাধীদের আশ্রয় দিতে পারে না- এমন বার্তা দিয়েছে।”
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস সরবরাহকারী কোম্পানি জেবিএস দেড়শরও বেশি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের মাধ্যমে ১৫টি দেশে ব্যবসা করে আসছে। ১৯৫৩ সালে হোসে বাতিস্তা সোবরিনহো একটি কসাইখানা চালুর মাধ্যমে এই কোম্পানির শুরু করেন।
এই সাইবার হামলার বিষয়ে জেবিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাইবার হামলা সমাধানে তারা ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ অর্জন করেছে এবং আশা করা যাচ্ছে বুধবারের মধ্যে এর বেশিরভাগ মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র চালু হয়ে যাবে।
সোমবার কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, হামলাটি শনাক্ত হওয়ার পরপরই তারা হামলার শিকার সব আইটি ব্যবস্থা থামিয়ে দেয়। তাদের ব্যাকআপ সার্ভার হ্যাক করা হয়নি বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জেবিএসের কেন্দ্রগুলোর কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী শ্রম সংগঠন ইউনাইটেড ফুড এবং কমার্শিয়াল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন কোম্পানিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যাতে কর্মীদের পাওয়া নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
আধুনিক মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রগুলোতে আইটি ব্যবস্থা একটি অপরিহার্য অংশ, বিশেষ করে বিল প্রস্তুত করা, চালান তৈরি করাসহ একাধিক পর্যায় নিয়ন্ত্রিত হয় কম্পিউটার ব্যবস্থার মাধ্যমে।
বাণিজ্য গোষ্ঠী বিফ সেন্ট্রালের মতে, জেবিএসের কার্যক্রমে এই বিঘ্ন ঘটায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে সুপারমার্কেট এবং ম্যাকডনাল্ডসের মতো বড় চেইন শপগুলোতে, কারণ তাদের ধারাবাহিক পণ্য সরবরাহ দরকার।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, জেবিএসের সবচেয়ে বড় পাঁচটি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রই যুক্তরাষ্ট্রে এবং সেগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ মাংস উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে সেদেশে। ক্যানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতেও জেবিএসের ওপর এই সাইবার হামলার প্রভাব পড়েছে। তবে জেবিএসের দক্ষিণ অ্যামেরিকার কেন্দ্রগুলো চালু আছে এবং সেগুলোর কার্যক্রমে কোন বিঘ্ন দেখা দেয়নি।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের জ্বালানি সরবরাহ লাইন নিয়ন্ত্রণকারী কোম্পানি কলোনিয়াল পাইপলাইনও সাইবার হামলার শিকার হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে তারা ৪৪ লাখ ডলার পরিশোধ করে হামলাকারী অপরাধী চক্রকে।